দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীর উপজেলার হাট বালিগাঁও কবরস্থান হতে মৃত্যুর ছয় মাস পরে আওয়ামী লীগ নেতা আজগর হোসেন চঞ্চল বেপারীর মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর শরীফ ফাহাদ এর উপস্থিতিতে এই লাশ উত্তোলন করা হয়।
নিহত আজগর হোসেন চঞ্চল মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মামলার এজাহার ও মামলার বাদি নিহত সুমী আক্তার এর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে নিজের কাজ করার জন্য বাড়ির বাহিরে যান নিহত চঞ্চল। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চঞ্চল তার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দিলে তার সঙ্গে কিছু লোকের বাকবিতণ্ডা ও চেঁচামেচি শুনতে পান। এ সময় আপনার সঙ্গে কে বা কারা আছে জানতে চাইলে চঞ্চল জানায় তার সঙ্গে বালিগাওঁ গ্রামের রিটু, হাবিবুর রহমান সোহেল, নিতাই দাস ও উত্তম সরকার সানীসহ আরও কয়েকজন রয়েছে।
পরে ওই দিন রাতেই ইসলামপুর রাস্তার পাশে মুমূর্ষু অবস্থায় চঞ্চলকে বালিগাওঁ বাজারের ব্যবসায়ী আমির হোসেন দেখতে পেয়ে বালিগাঁও ডক্টরস ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন।
ঢাকাস্থ আসগর আলী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারিখে সে মারা যায়। পরে নিহতের পরিবারকে ভুল বুঝিয়ে পোস্টমটের্ম ছাড়াই চঞ্চলকে কৌশলে মাটি দিতে বাধ্য করে।
পরবর্তীতে সুমি আক্তার জানতে পারে, তার স্বামীর বুকের হাড় ৯টি ভাঙ্গা ছিল এবং পিঠের মেরুদণ্ডের হাড় ৩ জায়গায় ভাঙ্গা ছিল। দুষ্কৃতিকারীরা চঞ্চল মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছে বললেও মোটর সাইকেলের দুর্ঘটনায় যে ধরনের মোটরসাইকেল এবং নিহতের মরদেহে আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার কথা সেই ধরনের আঘাত নেই।
তিনি আরও জানান চঞ্চলের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে কিভাবে মারা গেল সে বিষয়ে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারায় চঞ্চলের স্ত্রী সুমী বেগম বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলী আদালতে সি.আর মামলা- ৪১৬/২৩, ধারা ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধি দায়ের করে। সেখান থেকেও মামলাটি খারিজ করে দিলে মুন্সিগঞ্জ জজ আদালতে ফৌ. রিভিশন মোকদ্দমা নং- ১৫১/২০২৩ মামলা দায়ের করা হয়। পরে ওই মামলার প্রেক্ষিতে টঙ্গিবাড়ী থানাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে নিতে আদেশ দেয় আদালত।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সুমী আক্তার বলেন, আমার প্রথমে দুই মেয়ে রয়েছে। যখন আমার স্বামী চঞ্চল মারা যায় তখন আরেকটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়।
সে সময় আমি অনেক অসুস্থ ছিলাম বিছানা থেকে উঠতে পারিনি আমি অসুস্থ থাকায় বুঝতে পারিনি আমার স্বামীকে কেউ মেরে ফেলেছে। যারা আমার স্বামীকে মেরেছে তারা দ্রুত কৌশলে তার দাফনের কাজ সেরে ফেলে। জানতে পারলাম ওরা পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়।
বালিগাঁও গ্রামের মোফাজ্জল কমান্ডার এর ছেলে রিটু, যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান সোহেল, নিতাই দাস, উত্তম সরকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করে রাস্তার নির্জন স্থানে ফেলে রেখে যায়। আমি তাদের আসামি করে মুন্সিগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গীবাড়ী থানা এসআই আল মামুন জানান, আদালতের নির্দেশে টঙ্গীবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়। যার নম্বর ১৬(১)২৪। সেই মামলায় আদালত নিহতের লাশ কবর হতে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। আজ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এফএইচ