দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বান্দরবানের রুমা খাল থেকে অবৈধভাবে খননযন্ত্র (ড্রেজার মেশিন) দিয়ে বালু উত্তোলন করছে তিন প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। একটি দুটি নয় অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত তিনটি স্পটে বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে জমি, বসতবাড়ি ও সিঁড়ি ও ঘাট। বালু তোলার কারণে নদীর গতিপথ হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষায় নদীতে জমি ভেঙে যাচ্ছে। আর প্রশাসন বলছে বালু তোলার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুমা সদর ইউনিয়নের মুনলাইপাড়া ঘাট, রুমারচর ঘাট ও পলিকাপাড়া ঘাটসংলগ্ন স্থানে গত কিছুদিন ধরে বালু উত্তোলন করছে ১০ সদস্যের তিনটি সিন্ডিকেট।
যার মধ্যে রুমা খালের মুখের নিচে একটি ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করছে মোতালেব, জুয়েল দাশ, দস্তগীর ও মিল্টন মার্মা।
রুমা খালের উপরে দুটি মেশিন ব্যবহার করছে হাছন মুরাদ, বক্কর মেম্বার, সাকিল, শাহজাহান ও প্রজলাল চক্রবর্তী।
এছাড়া পলিকাপাড়ার নিচে একটি মেশিন দিয়ে বালু তুলছে অংচয়াং মার্মা। সিন্ডিকেটের অধিকাংশ সদস্য স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় এলাকাবাসী প্রকাশ্যে তাদের কখনও বাধা দিতে সাহস পান না।
সরেজমিনে দেখা যায়, রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের থানা পাড়া থেকে মুনলাইপাড়া সড়কের ডান পাশ ঘেষে সাঙ্গু খালের দিকে বয়ে গেছে রুমা খাল।
এই জায়গার অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে খালের পাড় ও পানির তলদেশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে পার্শ্ববর্তী এলাকা। বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ঘনফুট হারে রুমা খাল থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিফুট বালু ৫-৭টাকা হারে তোলা হলেও সেই বালু সরকারি কাজে বিক্রি হচ্ছে ১৮-১৯ টাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ইউপি মেম্বার জানান, প্রতিদিন প্রতি মেসিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করে তারা কাজ করে থাকেন। প্রশাসন অভিযান চালায় একদিন, কিন্তু সেই অভিযান বালু ব্যবসায়ীদের জন্য আর্শিবাদ হয়।
কারণ একদিনের অভিযানের অজুহাতে তারা বহুদিন বালু তোলার সুযোগ পান। অবৈধ বালু তোলা হলেও প্রশাসন কেন বালু মহাল ইজারা দিচ্ছে না প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হলে বালু তোলার কাজে সম্পৃক্ত বক্কর মেম্বার ও হাসান মুরাদ এই প্রতিবেদককে জানান, বালু উত্তোলনে তাদের কোনো প্রশাসনিক অনুমতি নেই। সবার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে কাজ করছেন। তবে প্রকাশ্যে বালু তোলা হলেও জানেন না পরিবেশ অধিদপ্তর। জানতে চাইলে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম বালু তোলা হচ্ছে। আমরা অভিযানে যাব এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এই প্রসঙ্গে রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, রুমা খাল থেকে বালু উত্তোলন করতে সরকারিভাবে কাউকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ অভিযান চালিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ অভিযানে জরিমানা করা হলেও পরে তারা আবারও কাজ করেন। তাই পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়মিত মামলা করলে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সহজ হবে। এখন নির্বাচনি নানা ব্যস্ততায় সুযোগ নিচ্ছেন তারা। তবে আমাদের কাজ আমরা করে যাব।
জেবি