সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মানিকগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় পুন:নির্মাণ রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের এক পরিবারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত ২৯ নভেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য ও প্রকল্পের সভাপতি। অভিযোগপত্রে জনস্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাক্ষর করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্য বরুন্ডি এলাকায় ওই পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্য বরুন্ডি এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় আ. খালেক মেম্বারের বাড়ি থেকে ইন্নত আলীর বাড়ি পর্যন্ত এক লাখ ৬৭ হাজার ৯৭১ টাকা ব্যয়ে ১৫০ মিটার রাস্তাটি পুন:নির্মাণের কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়।
প্রকল্পের সভাপতির দায়িত্ব পান ইউনিয়নের ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শেফালী আক্তার। রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু করলে ইন্নত আলী ও তার পরিবারের দুই পুলিশ সদস্যসহ সাতজন কাজে বাধা দেয়। এ সময় রাস্তা নির্মাণের কাজে আসা ২০ জন শ্রমিককে নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া রাস্তাটির নির্মাণ কাজ যাতে আর না করা যায় সেজন্য রাস্তার ওপর একটি ছাপড়া ঘর নির্মাণ করে এবং ময়লা আবর্জনা ফেলে অনুপযোগী করে তারা। এর আগেও তারা পুলিশ পরিবারের দাপট খাটিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় রাস্তাটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। রাস্তাটি নির্মাণ না হলে এবং চলাচলের উপযোগী না করা হলে ভোগান্তিতে পড়বে চার থেকে ৫০০ পরিবারের হাজারও মানুষ। এ বিষয়ে অভিযোগকারী ও রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি নারী ইউপি সদস্য বলেন, ইন্নত আলীর দুই ছেলে পুলিশে চাকরি করে। এই দাপটে তারা সমাজ মানে না। চার থেকে ৫০০ পরিবারের চলাচলের সুবিধার্থে সরকারিভাবে নির্মাণাধীন রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয়দের গণস্বাক্ষরসহ আমি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযোগপত্রে জনস্বার্থে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর সুপারিশের স্বাক্ষর করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। প্রশাসন তদন্ত করে জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এমনটাই আশাবাদী বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইন্নত আলী বলেন, যেখান দিয়ে রাস্তা হচ্ছে তা ব্যক্তি মালিকানাধীন। সরকারিভাবে রাস্তা হচ্ছে না বলে জানতে পেরেছি। এছাড়া এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।
এ বিষয়ে আটিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান নুর এ আলম সরকার বলেন, স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে পুরোনো রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে পুন:নির্মাণের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় ইন্নত আলী সরকারি রাস্তার নির্মাণ কাজে বাধা দেয়।
তার দুই ছেলে পুলিশ সদস্য হওয়ায় যেন তিনি অনেক ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন বলে মনে করছেন। ইন্নত আলী যে জায়গা জুড়ে বসবাস করছে তাও সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত। জনস্বার্থ বিবেচনা করে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেবি/এম