সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সরকারিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণে ঠিকাদার শ্রমিকলীগ নেতা নাজিমুল ইসলাম জামালের বিরুদ্ধে পরিবহন, মাটি ভরাট ও ইট বাবদ টাকা দাবির অভিযোগ উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) উপজেলার বাস্তা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সফর উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ঘর নির্মাণ শেষ না হওয়ায় অসুস্থ স্ত্রী নিয়ে অন্যের ঘরে বসবাস করছেন তিনি।
নাজিমুল ইসলাম জামাল সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের পারিল রফিকনগর এলাকার ধলু মিয়ার ছেলে এবং উপজেলা শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া বীরনিবাসের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে শুরু হয়। এ সময় ঘর নির্মাণস্থলে মাটি ভরাট ও মালামাল পরিবহনের জন্য তাকে চাপ দিয়ে ৬০ হাজার টাকা খরচ করায় ঠিকাদার জামাল।
এরপর ৫ মাস কাজ বন্ধ রেখে নতুন করে কাজ শুরু করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সফর উদ্দিনের কাছে দুই গাড়ি ইটের মূল্য বাবদ ৮০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না চাইলে নির্মাণ কাজ হবে না বলে হুমকি দেন জামাল।
একই এলাকার আরেক ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, জামাল তাকে দিয়েও ২৫ হাজার টাকার বালু ভরাট করিয়েছে। সেইসঙ্গে ঘর নির্মাণ কাজের জন্য ইট দাবি করে। তা দিতে না চাইলে নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করে জামাল। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করলে পিআইও এবং ইঞ্জিনিয়ার এসে ঘটনার সত্যতা পায়। সেগুলো পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বললেও তারপর থেকে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে, উপজেলার গাজিন্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ ২৫ হাজার ও আলাউদ্দিনকে ৩০ হাজার টাকার বালু ভরাট ও পরিবহনের জন্য খরচ করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
উপজেলার জায়গীর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন নান্নু অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ রাখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল। বিল না পাওয়ার অজুহাতে ঘর নির্মাণে গত রমজান মাস থেকে তালবাহানা শুরু করছে জামাল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. নাজিমুল ইসলাম জামাল সাংবাকিদের বলেন, সরকারি কাজ এটা টেন্ডারের মাধ্যমে পেয়েছি। বাজেট অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সত্য না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সবসময় কাজগুলোর খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আহাদী হোসেন বলেন, বীরনিবাস নির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা চাওয়া বা নেওয়ার নিয়ম নেই। বীরমুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ঘর নির্মাণে কিছু নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলো পরিবর্তন করে দিতে বলা হয়েছে।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বীর নিবাস নির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে কোনো প্রকার খরচ চাওয়া বা নেয়ার সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার মিটিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, অস্বচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও প্রয়াত যুদ্ধ বীরদের পরিবারের সদস্যদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘বীর নিবাস’ নামের আবাসন প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৩০ হাজার এই বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে।
জেবি