দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে রাধাপদ রায় (৮০) নামের এক পল্লীকবিকে মারপিটের ঘটনায় মূল আসামি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে কুড়িগ্রাম পৌর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম।
সম্প্রতি নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের (জামতলা) কচুয়ারপাড় এলাকার পল্লীকবি রাধাপদ রায়ের নিজ গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘ সাত মাস আগে সালিশে কথা কাটাকাটি হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে কচুয়ারপাড় ব্রিজের গোঁড়ায় পল্লীকবি রাধাপদ রায় প্রতিদিনের মতো মাছ শিকারে যান। জমিজমা সংক্রান্তের জেরে পার্শ্ববর্তী মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম ও কদু মিয়া পল্লীকবি রাধাপদ রায়কে মাছ শিকার করতে দেখে পেছন থেকে অতর্কিত হামলায় করে পিঠে বেদম মারপিট করেন ও দাড়ি ধরে মাটিতে ফেলে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন।
পল্লীকবির চিৎকারে স্থানীয় সুবল চন্দ্র, বলরাম, বিধান ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পল্লীকবি রাধাপদ রায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে সেদিনই নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
গত শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় পরদিন রোববার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় একটি মামলা করেন।
কুড়িগ্রাম পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে এবং পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পল্লীকবি রাধাপদ রায়কে মারধরের ঘটনায় প্রধান আসামি রফিকুল ইসলামকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। অপর আসামি কদুর আলীকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, এই বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত। আপনারা সবাই জানেন এটি পারিবারিক ঘটনা। কেউ কেউ এটিকে অন্যভাবে প্রচারণাও চালিয়েছে। ভুয়া তথ্য না ছড়ানোর জন্য সবাইকে বিনতি অনুরোধ করছি। আমরা কবিকে দেখাশোনা করছি। তার ছেলে-মেয়ে আমাদেরকে বলেছে বিষয়টি পারিবারিক।
উল্লেখ্য, রাধাপদ রায় জীবনে বেশিদূর পড়ালেখা করতে পারেননি। পড়েছেন মাত্র ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত। নিজের লেখা গান, কবিতা মানুষকে শুনিয়ে সামান্য উপার্জনে চলে তার সংসার। আঞ্চলিক ভাষায় তার লেখা গান ও কবিতাগুলো বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতোমধ্যে তার লেখা কবিতা ‘কেয়ামতের আলামত জানি কিন্তু মানি না’ শিরোনামে কবিতাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাধাপদ সরকারের নিজের লেখা আঞ্চলিক ভাষায় শতাধিক গান ও কবিতা রয়েছে।
জেবি