সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকির অর্থায়ন ও বীমার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলের তৃণমূল বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে জেলা পর্যায়ের প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ পাওয়া শুধু ন্যায্যতা না এটি অধিকারও বটে। এবং এই অধিকার আদায়ের সংগ্রামের এটি একটি উপযুক্ত সময় বলে উল্লেখ করেছেন মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় হোটেল কোরায়েশিতে অনুষ্ঠিত জেলা পর্যায়ের অবহিতকরণ সভায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাতক্ষীরা-২ এর সংসদ সদস্য রবি ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মইনুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের আয়োজক সংগঠন অ্যান অর্গানাইজেশন ফর সোশিও ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট-অ্যাওসেড এর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন।
সভায় মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো জলবায়ু তহবিলে পাওয়া অর্থ তাদের অধিকার। এটি দান অনুদানের বিষয় নয়, এটি ন্যায্যতা। একই সঙ্গে আমাদের মাথায় রাখতে হবে উন্নত দেশগুলো যে কারণে পরিবেশ প্রতিবেশ ধ্বংস করছে একই কাজ যেন আমাদের দ্বারা সংঘটিত না হয়।
দাতা সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশের সহায়তায় সাতক্ষীরায় প্রকল্প অবহিতকরণ সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন কেয়ারের হিউমেরিটেরিয়ান অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন প্রকল্পের উপ-পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় দাস।
আলোচনা করেন সমাজ সেবা’র উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ, মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা অফিসের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আব্দুল ওয়াহেদ, সুশীলনের নবনির্বাচিত পরিচালক মোস্তফা আক্তারুজ্জামান পল্টু, ব্র্যাকের জেলা ম্যানেজার আশরাফুল মাশরুদ, উত্তরণের জেলা প্রধান ও মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের জেলা কমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট মুনীর উদ্দিন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও এমএসএফ’র জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট শাহনাজ পারভিন মিলি, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ওয়ালিউর রহমান, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী, গোলাম সারোয়ার, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মন্ডল, প্রগতি’র নির্বাহী পরিচালক আশেক ই এলাহী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা অফিসের সাব ডিভিশন ইঞ্জিনিয়ার শুভেন্দু বিশ্বাস প্রমুখ।
অ্যাওসেড এর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন জানান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক ও স্থানীয় তহবিল গঠনের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা পর্যায়ে সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারিখাত এবং একাডেমিয়ার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ম্যাপ-এর কাঠামো, সমন্বয় এবং নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করা হবে। সাতক্ষীরার ও বাগেরহাটের ২৭৫০ অংশগ্রহণকারীকে এই প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল নির্ধারিত। সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ইসললামকাটি, খেশরা ও জালালপুর এবং বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা, ধানসাগর ও সাউথখালি ইউনিয়নকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জার্মান দাতা সংস্থা এমজেড ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে কেয়ার বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তায় ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাওসেডের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ৩ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত, একাডেমিয়ার প্রতিনিধি ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত মাল্টি-অ্যাক্টর প্লাটফর্ম জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি সুনির্দিষ্ট করতে তৎপরতা বৃদ্ধিসহ ক্ষতিপূরণের জন্য জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ ও সুষ্ঠু বণ্টনের জন্য বিভিন্ন ফোরামে আওয়াজ তোলার পাশাপাশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
অ্যাওসেড এর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি বাড়ানোর জন্য একমাত্র উন্নত দেশগুলো দায়ী। এজন্য এই প্রকৃত ক্ষতিপূরণ তাদেরকেই দিতে হবে। সারাবিশ্বে ১০টি দেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বাংলাদেশে এই প্রকল্পটি জুলাই মাসের ১ তারিখে শুরু হয়ে ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলমান থাকবে। খুলনার বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা, সাউথখালী, ও ধানসাগর এবং সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় ইসলামকাটি, জালালপুর, ও খেশরা ইউনিয়নের মোট ২৭৫০জন অংশগ্রহণকারী এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করবে।
অবহিতকরণ সভায় প্রকল্প’র পরিচিতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেয়ার বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর হিমাদ্রী শেখর মন্ডল ও অ্যাওসেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হেলেনা খাতুন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কৃষি প্রকৌশলী মো. হারুনর রশিদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিনি, দেশ টিভির সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের আমিনা বিলকিস ময়না, জেলা তথ্য কর্মকর্তা জাহারুল ইসলাম টুটুল, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব দত্ত, পৌর কাউন্সিলর কায়সারুজ্জামান হিমেল, কালের কণ্ঠের কৌশিক দে, মোশাররফ হোসেন, ঢাকা ট্রিবিউনের আসাদুজ্জামান মধু, সামাজিক বন বিভাগের উপজেলা ফরেস্টার আওছাফুর রহমান, বারসিকের সহকারী প্রোগ্রাম অফিসার গাজী মাহিদা মিজান, এমপি’র পিএ শেখ মাহফুজুর রহমান, এমডি জিয়াউর বিন সেলিম, এমপি’র পিএ মফিজুল হক, ভয়েজ সাতক্ষীরার আব্দুর রহিম, কানিজ সায়মা, মহুয়া মঞ্জুরী, আব্দুস সালাম, এসকে আফজাল হোসেন, অ্যাওসেডের এ্যাডভোকেসি অফিসার গোলাম মোয়াজ্জেম, চায়না দাসসহ বিভিন্ন এনজিও’র কর্মকর্তাবৃন্দ।
এইউ