সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার আসামপুর গ্রাম হতে অপহরণের একমাস পর অপহৃত এক শিশুকে শিকলবন্ধী অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহৃত শিশুটির নাম মো. ফাইজুর রহমান ফারকুল(১৩)। সে উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে । রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টায় অপহরণকারীর দলনেতা আব্দুল্লাহ আল আমিন টাকা নিতে গেলে পুলিশ থাকে ধাওয়া করে তাকে আটক করেন।
রোববার ভোরে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশুটিসহ ৬ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য গত ২৫ আগস্ট দুপুরে আসামপুর গ্রামের বিল্লাল আহমেদর বাড়ির সামনে ডাউকা নদীর পাড় থেকে অজ্ঞতনামা ব্যক্তিরা এই শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিখোঁজ শিশুটির স্বজন গত ২৭ আগস্ট শান্তিগঞ্জ থানায় একটি হারানো জিডি করেন। পরে অপহৃত শিশুর পিতা মো. আব্দুল গফুর বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে গত ১২ সেপ্টেবর শান্তিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুল(১৩) গত ২৫ আগস্ট দুপুরে আসামপুর গ্রামের বিল্লাল আহমেদের বাড়ির সামনে ডাউকা নদীর পাড়ে গেলে অজ্ঞতনামা ব্যক্তিরা ওই শিশুটিকে অপহরণ করে নৌকায় তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর থেকে মো. ফাইজুর রহমান ফারকুলের পিতা মো. আব্দুল গফুরসহ স্বজনরা শিশুটির সন্ধানে এলাকার বিভিন্ন জায়গাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান পাননি।
পরে গত ২৭ আগস্ট শান্তিগঞ্জ থানায় একটি হারানো জিডি করা হয় এবং গত ১২ সেপ্টেম্বর অপহিৃত শিশুটির পিতা বাদী হয়ে শান্তিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে বিভিন্ন কৌশলে তদন্তে নামে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুলকে(১৩) নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তার পরিবারের ইমো নাম্বার পাঠাতে থাকে এবং তিনলাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। এতে পরিবারের লোকজন বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।
ঘটনার পর থেকে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই কাজল চন্দ্র দেব তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত শুরু করেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর থানা পুলিশের লোকজন ছদ্মবেশ ধারণ করে মুক্তিপনের টাকার লোভ দেখিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। অপহরণকারীদের কথা মতো পুলিশ ছাতক থানা এলাকার ধান ক্ষেতে দাবিকৃত টাকা রেখে আসেন। পরে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা কাজল চন্দ্র দেবের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা
অপহরণকারীদের কথামতো ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শান্তিগঞ্জ, ছাতক ও সিলেটের বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেন। পরে অপহরণকারী চক্রের সদস্যেদের তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুলকে(১৩) আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ভোরে ছাতক থানা এলাকার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের হরিশ্বরণপুর গ্রাম থেকে অপহরণকারী জুনেদের বাড়ির দু’তলার ধানের গোলা থেকে শিকলবন্ধী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারীরা হলেন জেলার ছাতক উপজেলার হরিশ্বরণপুর গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র আব্দুল্লাহ আল আমিন ওরফে জুনেদ, একই গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র জিয়াউর রহমান, মৃত মদরিছ আলীর পুত্র আব্দুল সালাম, আব্দুল সালামের মেয়ে খাতিজা বেগম, জগন্নাথপুর থানা এলাকার কামারখাল গ্রামের বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মোছা. বেগম ও মুল পরিকল্পনাকারী একই গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে বিল্লাল মিয়া।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি খুবই স্পর্শ কাতর ঘটনা। একটি শিশুকে অপহরণ করে দীর্ঘ ১ মাস পর শিকলবন্দী অবস্থায় অপহরণকারীর বাড়ির ধানের গোলার ভেতরে আটক করে রাখা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। আমরা বিষয়টি আমাদের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করি এবং শিশুটিকে উদ্ধারসহ পুরো অপহরণচক্রকে সনাক্ত করে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদেরকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন না মুঞ্জর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন।
এম