সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কোর্ট হাজতখানায় মইনুল ইসলাম (২৩) নামের এক আসামির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। হাজতখানা থেকে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মইনুল আরএমপির এয়ারপোর্ট থানার পাকুড়িয়া উত্তরপাড়া এলাকার মো. রফিকের ছেলে। মইনুলের মৃত্যুর সনদে লেখা হয়েছে, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। হাজতখানার পুলিশ দাবি করছে, গরমে অসুস্থ হয়ে আসামির মৃত্যু হয়েছে। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আত্মহত্যার আলামত।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরান হোসেন বলেন, আসামি মইনুল একজন মাদকসেবী। গত সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে পাকুড়িয়া এলাকা থেকে ৪ গ্রাম হেরোইনসহ তাকে আটক করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আদালতে পাঠানো হয়। কোর্ট হাজতখানা সুস্থ অবস্থায় আসামি গ্রহণ করেছে। তারপর কী হয়েছে তা তারা জানেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরএমপির মুখপাত্র ও নগর বিশেষ শাখার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আজই মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। আর আসামি মারা গেছে গতকাল। এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না।’
আরএমপির কোর্ট হাজতখানায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আসামিকে কোর্ট হাজতখানায় নেওয়া হয়। তাকে আদালতে তোলার প্রয়োজন হয়নি। বিকেল ৩টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাজতখানায় অসুস্থ হয়ে পড়েন আসামি। ৪টার দিকে তা দেখতে পেয়ে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুলিশ সদস্যদের দাবি, অতিরিক্ত গরমে স্ট্রোক করে আসামির মৃত্যু হয়েছে।
মইনুলের মৃত্যুর পর তার মৃত্যুসনদে চিকিৎসক লিখেছেন, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সুরতহাল প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কয়েকটি আলামত উঠে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুমতাহিনা কবির।
প্রতিবেদনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উল্লেখ করেন, লাশের গলায় কালো আঁচড় রয়েছে। কপালের দুই স্থানে পুরোনো কাল দাগ রয়েছে। এ ছাড়া আরও একটি আলামতের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন যা সাধারণত গলায় ফাঁস দিয়ে কেউ আত্মহত্যা করলে দেখা যায়।
মইনুলের মৃত্যুর ঘটনায় নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হক বলেন, ‘মৃত্যুসনদে চিকিৎসক উল্লেখ করেছেন যে হৃদ্রোগে আসামির মৃত্যু হয়েছে। আমরাও এটুকুই জানি। এখন মরদেহ রামেকের মর্গে আছে। সেখানে মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে আসবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেটা বলতে পারব।’
মইনুলের মৃত্যু নিয়ে অবশ্য তার পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই। তার মামা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমার ভাগনে মাদকাসক্ত ছিল। হাজতখানায় অসুস্থ হয়ে সে মারা গেছে বলে পুলিশ আমাদের জানিয়েছে। এই মৃত্যু নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।’
জেবি