সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বিগত সরকারের তৈরি করা ড্যাপের বিধিমালা সংশোধনের জোরালো দাবি জানিয়েছেন ঢাকা শহরের ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা। রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা শহরের ভূমি মালিকরা সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা শহরের ভূমি মালিকদের সমন্বয়ক প্রফেসর ড. দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ। তিনি বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ও নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে স্বৈরাচারী দলের দোসর ও রাজউকের কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাবৃন্দের ছত্রছায়ায় ঢাকা শহরের বহুবিধ সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে একমাত্র ভবন নির্মাণের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে ড্যাপ ২০২২-২০৩৫ প্রণয়ন করা হয়। যা ঢাকা শহরের নাগরিকদের মধ্যে বিশাল বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ড্যাপে ঢাকা শহরের মাত্র ২০ শতাংশ পরিকল্পিত এরিয়ায় সুউচ্চ ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা রেখে অবশিষ্ট ৮০% এরিয়াকে অপরিকল্পিত এরিয়ার ট্যাগ দিয়ে ভবনের উচ্চতা ও আয়তন হ্রাস করে দেওয়া হয়। যাতে ঢাকা শহরের প্রকৃত ভূমি মালিকগণ কোনোভাবেই ভবন নির্মাণ করতে না পারে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা নগরবাসী নতুন করে কোনো ভবন নির্মাণ করতে গেলে দেখতে পাচ্ছি যে একই পরিমাণ জমিতে আগে যেখানে ১০ তলা ভবন হতো এবং যে আয়তন পাওয়া যেত এখন সেখানে ৫ তলা ভবন ও অর্ধেক আয়তন পাওয়া যাচ্ছে। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতি ও চরম বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছি। এতে আমাদেরকে (ঢাকা শহরের প্রকৃত ভূমি লিকবৃন্দকে) ঢাকা শহরের বাহিরে বের করে দেওয়ার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একই পরিমাণ জমিতে পূর্বে ১০ তলা হলে এখন ৫ তলা হবে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদি এটা করতেই হয় তাহলে পূর্বের নির্মিত ১০ তলা বা ততোধিক ভবন ভেঙ্গে সব ৫ তলায় রূপান্তরিত করতে হবে। এরপর ড্যাপ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।
বৈষম্যহীন ড্যাপ সংশোধন না করলে ঢাকার জমির মালিকরা একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন আয়োজকরা। এসময় সংবাদ সম্মেলনে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবিগুলো হলো-
১। ঢাকা শহরের সকল এরিয়ায় ২০০৮ সালের বিধিমালা মোতাবেক ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদান করতে হবে।
২। ২০০৮ এর বিধি অনুসারে রাস্তা অনুযায়ী যেখানে যত তলা পাওয়া যেত, তত তলা অনুমোদন দিতে হবে।
৩। ঢাকা শহরের সকল রাস্তাকে কমপক্ষে ২০ ফিটে উন্নীত করতে হবে।
৪। জলাশয়, খাল-বিল, নদী-নালা ভরাট বন্ধ করতে হবে।
৫। ধানি জমিতে ভবন নির্মাণের অনুমতি প্রদান বন্ধ করতে হবে।
৬। নির্মাণ অনুমোদন সহজকরণ করতে হবে।
৭। রাজউকের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের সকল বৈষম্যমূলক কাজের অবসান করে আগামী দিনে বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যমুক্ত দেশে রূপান্তরিত করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। ।
সংবাদ সম্মেলনে ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা শহরের বিভিন্ন এরিয়ার ভূমি-মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে কো-সমন্বয়ক মো. হুমায়ন কবির শিমুল, কে এম এজাজ মাহমুদ, সৈয়দা আফসারুন নাহার, মো. তানভিরুল ইসলাম ও মো আবুল হোসেন প্রমুখ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
অ