সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
যুব বিশ্বকাপ, অলিম্পিকে স্বর্ণ, লিগের সম্ভাব্য সব ট্রফি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা আমেরিকা, লা ফিনালিসিমা, বিশ্বকাপ এবং আটটি ব্যালন ডি’অর— এগুলো নিঃসন্দেহে লিওনেল মেসিকে নিয়ে গেছে সর্বকালের সেরা ফুটবলের কাতারে। কে ভেবেছিল রোজারিওর সেই ছোট্ট ছেলে, যে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নিজ শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল, সে একদিন রাজত্ব করবেন বিশ্ব ফুটবলে! বিশ্ববাসীকে চেনাবে নিজ শহরকে।
মেসির জন্মের পর প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতে আর্জেন্টাইন ভক্তরা, আর সেটা তার হাত ধরেই। ৮০০-এর বেশি গোল,আর কেবিনেটে অসংখ্য বড় ট্রফি। এমন একজন কিংবদন্তীর বিশেষ মুহূর্তগুলো বাছাই করা বেশ কঠিন।
২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে মেসির ট্রায়ালের ব্যবস্থা করে বার্সেলোনা। ১৪ ডিসেম্বর, কাগজ না পেয়ে ন্যাপকিনে মেসিকে কাতালান ক্লাবে স্বাক্ষর করান বার্সার ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাচ। সম্প্রতি সেই ন্যাপকিন বিক্রি হয়েছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার অর্থ ১১ কোটি টাকা।
পহেলা মে ২০০৫, দিনটি মেসির জন্য বিশেষ। ১৭ বছর বয়সে আলবাসেটের বিপক্ষে বার্সেলোনার জার্সিতে পেশাদার ফুটবলের সিনিয়র পর্যায়ে প্রথম গোল করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কাতালান জায়ান্টদের জার্সিতে গোল করেছেন ৬শর বেশি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিষেকটা সুখকর ছিল না মেসির। ২০০৫ সালের আগস্টে হাঙ্গেরির বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার জার্সিতে অভিষেক হয় তার। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন ১৮ বছর বয়সী মেসি। তবে মাঠে তার স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৪৩ সেকেন্ড। সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েছিলেন তিনি। এরপর পুরো ক্যারিয়ারে আর মাত্র দুবার লাল কার্ড দেখেছিলেন মেসি।
২০১২ সালে স্প্যানিশ লিগে গ্রানাডার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে বনে যান বার্সেলোনার সর্বোচ্চ গোলদাতা। এরপর ৭৭৮ ম্যাচে সর্বমোট গোল করেছেন ৬৭২টি। এতে নাম লেখান বার্সার কিংবদন্তির তালিকায়।
২০১২ সালে লিগের এক মৌসুমে ৯১ গোল করে অবিশ্বাস্য রেকর্ড গড়েন তিনি। ক্লাবের সর্বাধিক গোলদাতা। একই সঙ্গে দেশের জার্সিতেও সর্বোচ্চ গোল তার। সর্বোচ্চ ৮টি ব্যালন ডি’অর জয়ের রেকর্ড রয়েছে তার।
বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে দুটি বিশ্বকাপে জেতেন সেরা ফুটবলারের খেতাব গোল্ডেন বল। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ, বিশ্বকাপে দেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোল, ভিন্ন পাঁচ বিশ্বকাপে গোলের অ্যাসিস্ট, বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচে অধিনায়কত্ব, মাঠে সবচেয়ে বেশি মিনিট খেলা এবং আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড, সবই তার দখলে।
২০২১ সালে ব্রাজিল আয়োজন করে কোপার ৪৭তম আসর। ঐতিহাসিক মারাকানার ফাইনালে স্বাগতিকদের হারিয়ে ২৮ বছর পর কোপার শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। আর মেসির ট্রফি কেবিনেট ওঠে প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি।
২০২২ সালে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ফ্রান্সকে হারিয়ে অধরা বিশ্বকাপটাও নিজের করে নেন মেসি। মরুর বুকে তারার আলোয় আরাধ্য সেই সোনালি স্মারক উঠে ফুটবলের কালপুরুষের হাতে।
মেসি যখন ৩৬ পেড়িয়ে ৩৭টি বসন্তে পা রাখলেন তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলছে কোপা আমেরিকা কাপ। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় সর্বজয়ী ফুটবলের এই মহানায়ক শুধুই উপভোগ করছেন ফুটবলকে। তিনি যতদিন মাঠে থাকবেন, ততদিন ভক্তরাও উপভোগ করবেন তার খেলা।
এস