সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
অ্যামাজন বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স কোম্পানি। যেখানে চাকরি পাওয়াটা যেন স্বপ্নের মতোই। আর জনপ্রিয় এই ই-কমার্স সাইট অ্যামাজনে চাকরি করছেন সাতক্ষীরার যুবক নূর হোসেন। তিনি বছর খানেক যাবৎ সেখানে চাকরি করছেন। সেখানে ইতোমধ্যে কর্মদক্ষতা দিয়ে নিজের অবস্থান আরও মজবুত করেছেন নূর।
নূর হোসেনের জন্মস্থান সাতক্ষীরা জেলা সদরের ঘোনা গ্রামে। ঘোনা গ্রামের আয়ূব হোসেন ও মনজিলা বেগমের ছেলে নূর হোসেন।
নূর প্রাথমিক স্কুল জীবন শেষ করেছেন সাতক্ষীরা সদরের কাথন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর ঘোনা ইউনিয়ন বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সুনামের সঙ্গে কৃতকার্য হয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আদর্শ কলেজ থেকে কলেজ জীবন শেষ করেন। তিনি বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের কিং সৌদি বিন আব্দুলআজিজ ইউনিভার্সিটি ফর হেলথ সায়েন্সেসে পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্বের একমাত্র বৃহত্তর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের স্টোর-কোয়ালিটি হিসেবে কর্মরত আছেন।
নূর হোসেন জানান, জীবনের শুরুটা অনেক কষ্টের ছিল। বাবা-মা এবং ছোট ভাইকে নিয়ে গ্রামের পরিবেশে বেড়ে উঠেছি। বাবা ছিলেন কৃষক। খুব অভাব অনাটনের ভেতর দিয়েও নিজের পড়াশোনাটা ঠিকঠাক মত চালিয়ে নিয়েছি। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নটাকে বুকের মধ্য লালন করেছি প্রতি মুহূর্তে। বিশ্বখ্যাত অ্যামাজনে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ত্যাগ করে মধ্য প্রাচ্যের রিয়াদ শহরে আসি। দীর্ঘ সাধনার পর অ্যামাজনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। বর্তমানে অ্যামাজনের স্টোর-কোয়ালিটিতে কর্মরত আছি। আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে অ্যামাজনের এইচ.আর হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে।
নূর হোসেনের বাবা আয়ূব হোসেন জানান, নূর হোসেন অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছে। অন্যদের মতো সঠিকভাবে পোশাক কিংবা পড়াশোনা কোনটাই ভালোভাবে দিতে পারিনি। তবে তার নিজের ইচ্ছাশক্তি ছিল। স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সে নিজেকে সব আরাম আয়েশ থেকে দূরে রেখেছে। বর্তমানে বিশ্বের বড় একটি প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনে চাকরি করছে। খুশি আর আনন্দে বুকটা ভরা গেছে। তার মেধা ও শ্রম দিয়ে নিজের দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে পারে এটাই তার স্বপ্ন।
নূর হোসের মা মনজিলা বেগম জানান, ছেলের এত বড় অর্জন মা হিসাবে আমি গর্ব করি। আমাদের পরিবারটা আর্থিকভাবে অসচ্ছল। নূর হোসেনের বাবা পেশায় একজন কৃষক তার সামান্য উপার্জনের টাকায় সংসার চালাইতে হিমশিম খেতে হয় সেখানে নূর হোসেনের পড়াশোনা করানো এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেওয়া বেশ কষ্টকর ছিল। নূর হোসেনের প্রচেষ্টা আর মনোবল তাকে এত দূর নিয়ে গিয়েছে। সে আরও ভালো অবস্থানে কাজ করবে একই সঙ্গে দেশ ও সমাজের কল্যাণকর কাজের সঙ্গে থাকবে।
নূর হোসেনের প্রতিবেশী আব্দুল হাকিম জানান, ছোটবেলা থেকে দেখেছি নূর সবার থেকে আলাদা। সবাই যখন খেলাধুলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত নূর তখন নিজের পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেছে। আমাদের গ্রামের ছেলে বিশ্বের এত বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে এটা আমাদের জন্য গর্ব। তার এই সফলতা দেখে গ্রামের ছেলেরা উৎসাহ পাচ্ছে। একই সঙ্গে তার সফলতা অন্যদের কাছে রোল মডেল হিসেবে কাজ করবে।
সাতক্ষীরা সদরের ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, আমার ইউনিয়নের একটি ছেলের এমন অর্জন সত্যি প্রশংসার যোগ্য। গ্রামের পরিবেশে বেড়ে ওঠা একটি ছেলে বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানে কাজ করাটা স্বপ্নের মতো। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।
জেবি