সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত এমন নেতাদের টার্গেট করে টাকা হাতিয়ে নিতেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দেওয়া চক্রের তিন সদস্য।
মনোনয়ন জরিপে এগিয়ে রাখা হবে এমন কথা বলে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য। এ চক্রের মূল হোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শাহজাদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম মৃধা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার বিনোদপুর গ্রামের মো. দুলাল হোসেনের ছেলে ও প্রতারকচক্রের মূলহোতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৬), একই থানার নুয়ারনই গ্রামের বাহার মিয়ার মেয়ে তাছলিমা খাতুন (৩২) ও একই জেলার বেগমগঞ্জ থানার মনপুরা গ্রামের আছান উল্লাহর ছেলে মো. ফয়জুল্লাহ (৩০)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। একজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শাহজাদপুরের গ্রান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারকচক্রের মূলহোতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে মানবাধিকার কমিশনের একটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ। এরপর বাকি দুজনকে গভীর রাতে পাবনার ইশ্বরদী থানা পুলিশের সহায়তায় পাবনার রুপপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দুজনের কাছ থেকে ৬৩ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন, একটি প্রিমিও প্রাইভেট কার ও পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোপন সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জরিপের নামে অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে একটি প্রতারক চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মনোয়ন প্রত্যাশী বিভিন্ন জনের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করছে এবং জনমত জরিপে তাদের এগিয়ে রাখবে বলে টাকা দাবি করছে। এর প্রেক্ষিতে শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং প্রতারকচক্রের ব্যাপারে বিশ্বস্ত সোর্স নিয়োগ করে ও তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে।
এরই সূত্র ধরে গতকাল শাহজাদপুর থেকে একজনকে এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে পাবনার রুপপুর এলাকা থেকে বাকি দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে নগদ টাকা, প্রাইভেট কারসহ মানবাধিকারের আইডি কার্ডও পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভুয়া জনমত জরিপের কথা বলে তারা বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিত এবং অর্থনৈতিক সুবিধা চাইত। তারা নিজেদেরকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধি এবং মানবাধিকার সংস্থার কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিত। এ ছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১০-১২ জন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণামূলক অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়ার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে জাহাঙ্গীর ও তাসলিমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বাকিজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জেবি