সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশে তীব্র গরম পড়ছে। বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। রোদের প্রচণ্ড তাপে বাড়ির বাইরে পা ফেলাই মুশকিল। আবার ভেতরেও ভ্যাপসা গরম। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমলেও মিলছে না স্বস্তি। এমন পরিস্থিতিতে বৃষ্টির জন্য আল্লাহর দরবারে নামাজ পড়ে প্রার্থনা করে দোয়া করা সুন্নত। একে আরবিতে বলা হয় ‘ইসতিসকা’ অর্থাৎ পানি প্রার্থনা করা। বৃষ্টি তো তারই রহমত ও মহান কুদরতের প্রকাশ। তাই ইসতিসকার নামাজ শরিয়ত সিদ্ধ। নবীজিও এ নামাজ আদায় করেছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন। অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে (মেঘমালাকে) স্তরে স্তরে রাখেন। এর পর তুমি দেখতে পাও যে, তার মধ্য হতে বৃষ্টিধারা নির্গত হয়। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৩৮)
ইসলামের পরিভাষায় বৃষ্টির এই বিশেষ নামাজকে সালাতুল ইসতিসকা বা বৃষ্টিপ্রার্থনার নামাজ বলা হয়। যখন বৃষ্টির প্রবল প্রয়োজন হয় তখন সালাতুল ইসতিসকা আদায় করা মুস্তাহাব। তা আদায়ের পদ্ধতি হলো, যে ইমাম একটি দিন নির্ধারণ করবেন। সেই দিন তিনি সমস্ত লোকদের নিয়ে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে মাঠে (খোলা প্রান্তে) যাবেন। সেখানে আজান ইকামাত ছাড়া দুই রাকাত নামাজ পড়বেন। নামাজে উচ্চস্বরে কিরাত পাঠ করবেন। নামাজের পরে খুতবা দিবেন এবং খুতবার শুরুতে চাদর ঘুরিয়ে দিবেন, তারপর কেবলার দিকে দাঁড়িয়ে দুহাত তুলে দোয়া করবেন।, সবাই বসে বসে আমিন বলবে।
টানা তিন দিন ইস্তেকার জন্য বের হওয়া মুস্তাহাব। (দারুল উলূম দেওবন্দের মুস্তাফাদ ফাতাবী: ৫/২৩৮, ২১৪, ফতোয়া)
বৃষ্টির নামাজে বিনয়-নম্রতার সঙ্গে গমন করা সুন্নত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই যে বান্দার সব প্রয়োজন পূরণ করেন—এই বিশ্বাস অন্তরে জাগ্রত রাখতে হবে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,
‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুবই সাদামাটাভাবে, বিনয়-নম্রতা ও আকুতিসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে নামাজের মাঠে উপস্থিত হয়েছেন।’ (আবু দাউদ)
বৃষ্টির নামাজ আদায়ের সময় নিচের দোয়াটি পাঠ করা খুবই কল্যাণকর। এ দোয়াটি স্বয়ং নবী (সা.) বৃষ্টির জন্য পাঠ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, লোকজন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে অনাবৃষ্টির কষ্টের কথা বললে তিনি ঈদগাহে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে এই দোয়া করেন। এরপর আল্লাহর হুকুমে বৃষ্টি বর্ষণ হতে শুরু করে। বৃষ্টি থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষের ছোটাছুটি দেখে নবীজি হেসে ফেলেন। (আবু দাউদ: ১১৭৩)
দোয়াটি হলো,
উচ্চারণ: ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আর-রাহমানির রাহিম। মালিকি ইয়াউমিদ্দিন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইয়াফয়ালু মা ইউরিদ। আল্লাহুম্মা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল গানিয়্যু ওয়া নাহলুল ফুকারাউ। আনজিল আলাইনাল গাইছা ওয়াজআল মা আনজালতা লানা কুওয়্যাতান ওয়া বালাগান ইলা হিন।’
অর্থ: ‘সব প্রশংসা পৃথিবীর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তিনি পরম করুণাময়, দয়ালু ও শেষ বিচারের মালিক। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি যা ইচ্ছা করেন। হে আল্লাহ, তুমিই একমাত্র মাবুদ, তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই
তুমি ধনী, আমরা গরিব। আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করো এবং আমাদের জন্য যা অবতীর্ণ করো, তা আমাদের জন্য শক্তিময় ও কল্যাণ দান করো।’ (আবু দাউদ: ১১৭৩)