দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
প্রতিবারই ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়, বেশিরভাগ সময়েই বাসের শিডিউল বিপর্যয়, কখনো সড়কে যানজট। এবার সেরকম কিছুই ঘটেনি। শিডিউল অনুযায়ী সময়মতো বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রীদের অস্বস্তিতে ফেলেছে লাগেজের ভোগান্তি। বেশিরভাগ কাউন্টারেই অধিকাংশ যাত্রীকে লাগেজ নিয়ে বাইরে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) রাতে কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায়। লক্ষ্য করা যায় ট্রাফিক পুলিশের বাড়তি তৎপরতা।
সড়কে চাপ না থাকলেও বাস কাউন্টারগুলোর দৃশ্য দেখলেই মনে হবে সব চাপ যেন কাউন্টারে।
হানিফ বাস কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা শামীম বলেন, এবার এখনো অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটেনি। সড়কে চাপ বাড়ছে। তবে এখনো শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি। বাস যথাসময়েই ছেড়ে যাচ্ছে। তবে কাউন্টারে বাড়তি ভিড় রয়েছে। যানজট-ভোগান্তি এড়াতে হয়ত অনেকে আগে চলে এসেছেন কাউন্টারে। তাই চাপ বেড়েছে।
রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের দেশ ট্রাভেলসের কল্যাণপুর খাজা মার্কেট কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা খালিদ হাসান বলেন, গত ২৫ মার্চ চাপ ছিল সড়কে। আজ কোনো চাপ নেই, কিন্তু কাউন্টারে দেখেন যাত্রীদের ভিড়। এবার বাড়তি ছুটির আমেজে যাত্রীরা আগেই বাড়ি ফিরছে।
এদিকে বুধবার গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দূরপাল্লার বাস কিছু সিট খালি নিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে। তবে অন্যান্য বছরের মতো অতিরিক্ত ভাড়া নিতে দেখা যায়নি। সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে পারছেন যাত্রীরা।
ঈগল পরিবহনের গাবতলী কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা শরীফ আহমেদ বলেন, এখনও ঈদের যাত্রীর চাপ পড়েনি। খুলনার জন্য বিকেলে একটি গাড়ি রেডি করেছিলাম। মাত্র ১০ জন যাত্রী পেয়েছি। যাত্রীর অভাবে পরে গাড়ির যাত্রা বন্ধ করা হয়। যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে টিকিটের টাকা ফেরত দিতে হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি এবং রাত ১২টার দিকে আরেকটি বাস খুলনার উদ্দেশে রওনা দেবে। আজ আমরা নিয়মিত যাত্রী পাচ্ছি। আগামী ২৮ তারিখ থেকে ঈদের যাত্রীর চাপ পড়বে।
খুলনাগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন জানান, আজ অনেকগুলো বাস আছে, ভাড়াও নিয়মিত ভাড়া। যাত্রীর চাপ তেমন দেখিনি। সাড়ে ১০টার দিকে ছেড়ে যাবে ঈগল পরিবহনের একটি বাস। হয়ত কাল রাত থেকে যাত্রীর একটু চাপ পড়তে পারে।
ঈদকে কেন্দ্র করে গাবতলী আন্ত:জেলা বাস টার্মিনালের জন্য ৪০ আসনবিশিষ্ট বাসের ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ। সেখানে দেখা যায়, গাবতলী থেকে বরিশাল ৭১২ টাকা, গাবতলী থেকে পটুয়াখালী ৮১৯ টাকা, গাবতলী থেকে যশোর ৬৭৯ টাকা, গাবতলী থেকে বাগেরহাট ৮৯৩ টাকা, গাবতলী থেকে কালীগঞ্জ ৯৯৩ টাকা, গাবতলী থেকে সাতক্ষীরা ৯২০ টাকা, গাবতলী থেকে বেনাপোল ৭৩০ টাকা, গাবতলী থেকে কুষ্টিয়া ৬৭৬ টাকা ও গাবতলী থেকে মেহেরপুর ৭২৮ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোহাগ পরিবহনের গাবতলী ব্র্যাঞ্চের বুকিং অ্যাটেনডেন্ট মো. মেহেদি হাসান বলেন, গাবতলীর বাস টার্মিনাল হতে বিকাল থেকে পাঁচটি বাস পদ্মা সেতু ও আরিচা রোডে খুলনা ও বেনাপোল যাবে। গাড়িগুলোর সব আসন বুকিং হয়ে গেছে। সোহাগ ডট কমের মাধ্যমে ৪০টির মধ্যে প্রায় ২৫টি আসনের যাত্রী অনলাইনে টিকিট কেটে এসেছেন। ৩০ তারিখ পর্যন্ত শিডিউলের সব গাড়ির সিট বুকিং হয়ে গেছে। সোহাগ পরিবহনের বাসগুলো গাবতলী থেকে পদ্মা সেতু, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাগুরা, যশোর, খুলনা, বেনাপোল রোডে চলাচল করে। নন এসি চেয়ারকোচে ঢাকা থেকে বেনাপোল ৭৫০ টাকা, খুলনা ৬৫০ টাকা (পদ্মাসেতু), যশোর ৬৫০ টাকা, গোপালগঞ্জ ৫০০ টাকা, মাগুরা ৫৮০ টাকা ভাড়া নিয়ে থাকি। প্রতিটি রুটেই সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও কম নিয়ে থাকি।
রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি। প্রতিটি কাউন্টার থেকে যাত্রীদের ডাকা হচ্ছে। যেসব যাত্রীরা আসছেন, তারাও বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে দেখেশুনে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে গাবতলী বাস টার্মিনালে ব্যাপক নিরাপত্তার জোরদার করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাবের বাড়তি উপস্থিতি দেখা গেছে। তৈরি করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার।
কে