দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার কিছু পর প্রধান উপদেষ্টা রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেন বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের পক্ষ থেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম।
সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ ‘গণঅভ্যুত্থানের সাড়ে পাঁচ মাস পর রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিকভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের কি প্রয়োজন ছিল এমন প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমাদের রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে সেদিকে দৃষ্টি রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
অন্যদিকে সর্বদলীয় বৈঠকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে অংশ নেন চার সদস্যের একটি দল। পরবর্তীতে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীসহ সব রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্য ধারণ করার জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হোক, এ বিষয়ে একমত।
তবে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে দু’দিন আগে থেকে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া খসড়াগুলো অনেকেই সময়মতো পায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পরামর্শ দিয়েছি সরকারের এমন একটি মূল্যবান দলিল তৈরির পেছনে কোনো অস্থিরতা, অসংগতি বা সমন্বয়হীনতার প্রয়োজন নেই। ধীরস্থিরভাবে আমাদের এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় হওয়া দরকার।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা পরামর্শ দিয়েছি, সরকারের এমন মূল্যবান ঘোষণাপত্রের জন্য আরও মতবিনিময় হওয়া দরকার। তবে ঘোষণাপত্রের খসড়ায় অনেক মৌলিক জিনিস বাদ পড়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী শক্তি বড় একটি ইসলামী শক্তি, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তাদের অসাধারণ ত্যাগ, বহু মানুষকে শহিদ করা হয়েছে, নিরীহ-নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ার নেয়া হয়েছে- এই সত্য ইতিহাসগুলো ঘোষণাপত্রের কাঠামোয় স্থান পায়নি। ইতিহাস থেকে এমন মৌলিক বিষয়গুলো যেন বাদ না পড়ে আমরা সেগুলো সরকারের দৃষ্টিতে এনেছি। আমরা বলেছি- প্রক্রিয়াটা এমন হওয়া দরকার যাতে সব দলসহ স্টেকহোল্ডাররা মতামত দিতে পারে।
এদিকে বৈঠক শেষে সাংবাদিকেদর গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ঘোষণাপত্র তৈরিতে তাড়াহুড়া বা যেনতেন প্রক্রিয়া যেন না করা হয়।
তিনি বলেন, যেনতেন প্রক্রিয়া না করা হয়। ঘোষণাপত্র তৈরির জন্য সরকারের দিক থেকে এই উদ্যোগটা নেওয়া দরকার। এটা কী হবে? এটা আইনের দিক কী? রাজনৈতিক দিকগুলো কী? এ প্রশ্নগুলো সবার ঐকমত্যের জায়গা থেকে ঐকমত্য হবে।’
সরকারের পক্ষ থেকে একটি ড্রাফট কমিটি করা দরকার জানিয়ে সাকি বলেন, ড্রাফট কমিটি ড্রাফটিংয়ের দায়িত্বের জায়গায় থাকবেন। শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলসহ সব অংশীজনদের মতামতকে যুক্ত করে প্রয়োজনীয় সময় নিয়ে দলিলটি তৈরি করতে হবে। একটা ভবিষ্যতের দলিল। এটা আমাদের রাজনৈতিক সূত্র হিসেবে সব সময় কাজে লাগবে। সেই ভাবে যাতে তৈরি করা।