সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী অটোয়ায় নিজ বাসভবনের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
ঘোষণায় তিনি বলেছেন, তার দল লিবারেল পার্টি একজন উত্তরসূরী বেছে নেওয়ার আগ পর্যন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকবেন তিনি।
সোমবারের ভাষণে ট্রুডো বলেন, “আমার শুধু একটি দুঃখ যে আমরা আমাদের নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে পারলাম না। বর্তমানে যে নির্বাচন পদ্ধতি, তাতে আসলে কোনো ভোটারের পক্ষে ব্যালট পেপারে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় কোনো বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই; বরং এটি এমন একটি ব্যবস্থা…যে যার মাধ্যমে লাভবান হবেন আসলে সেইসব রাজনীতিবিদরা— যারা মেরুকরণ এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর রাজনীতি করেন।”
২০১৫ সালের নির্বাচনে জিতে প্রথমবারের মতো কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন ট্রুডো। তারপর আরও দু’টি নির্বাচনে জয়ের সুবাদে টানা প্রায় ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ৫৩ বছর বয়সী এই নেতা।
সাংবিধানিক সময় অনুযায়ী, চলতি বছর অক্টোবরে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা কানাডায়। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে লিবারেল পার্টির সরকারই ক্ষমতায় থাকবে। সেক্ষেত্রে দলের এমপিদের মধ্যে থেকে কেউ একজন প্রধানমন্ত্রীর পদে আসবেন। সোমবারের ভাষণে ট্রুডো জানিয়েছেন, সেই নতুন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।
প্রসঙ্গত, কানাডা একটানা সবচেয়ে বেশিদিন প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার রেকর্ডটি ট্রুডোর দখলে। জনপ্রিয়তার দিক থেকেও তিনি তার পূর্বসূরীদের তুলনায় অনেক এগিয়ে ছিলেন। বস্তুত, ট্রুডো যে পরিমাণ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তার পূর্বসূরী কোনো নেতা এর ধারেকাছে যেতে পারেননি।
তবে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ব্যাপকমাত্রায় আগমনের জেরে গত কয়েক বছরে কানাডার আবাসন ও জীবনযাত্রার ব্যায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়া এবং এই সংকট মোকাবিলায় ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যর্থতার কারণে তার জনপ্রিয়তায় ভাটার টান শুরু হয়েছিল।
এর মধ্যে গত অক্টোবরের শেষ দিকে প্রাদেশিক ও স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির কাছে প্রায় ভরাডুবি ঘটে লিবারেল পার্টির। ওই নির্বাচনের পর থেকেই চাপ বাড়ছিল জাস্টিন ট্রুডোর ওপর। চাপ আরও বাড়ে গত ডিসেম্বরে, রাষ্ট্রীয় নীতি নিয়ে ট্রুডোর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর। লিবারেল পার্টির নেতা-কর্মী ও নীতি নির্ধারকরা চাইছিলেন, আগামী পার্লামেন্টে নির্বাচনের আগে যেন ট্রুডো দলের শীর্ষ নেতত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।
দলের এই মতামতের প্রতি সম্মান জানিয়েই পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন তিনি।
এফএইচ/