সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন মা। পরিবারে আয়ের উৎস বলতে একটি গাভি। সেই গাভির দুধ বিক্রির আয়ে চলে সংসার। মাকে সাহায্য করতে অন্যের বাড়িতে বাসন মাজার কাজ করে মেয়েটি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়ালেখাও চালিয়ে যান। তবে নিয়মিত বিদ্যালয়েও উপস্থিত হতে পারেন না। আর সেই মেয়েটিই এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের মেয়েটির নাম হৈমন্তী রানী দত্ত। তার বাবার নাম শিশির রঞ্জন দত্ত, মায়ের নাম স্মৃতি রানী দত্ত। উপজেলার কলারণ চণ্ডীপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেয় হৈমন্তী। বিদ্যালয়টি থেকে এবার ৭২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে হৈমন্তী বিদ্যালয় থেকে একাই জিপিএ ৫ পায়। তার এ রেজাল্টে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শুভাকাঙ্খীরা খুশি।
জানা গেছে, হৈমন্তীর বাবা আড়াই বছর আগে মা ও দুই মেয়ে রেখে মারা যান। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। রেখে যান একটি গাভি। বাবার মৃত্যুর পর তার মা গাভি পালন করেন। প্রতিদিন তিন-চার কেজি দুধ বিক্রি করেন। তা থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। এই আয়ের একটি অংশ গাভির পেছনে ব্যয় করতে হয়। দুধের অবশিষ্ট আয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। হৈমন্তীর ছোট বোন মৌমিতা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
মেয়েটির বাড়িতে একচালা টিনের ছাপরা ঘর। এখানে কোনো রকমে থাকতে হয় তাদের। ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছুই নেই।
হৈমন্তী বলল, আমি একটি ভালো কলেজে ভর্তি হতে চাই। আমার ইচ্ছা একজন কলেজ শিক্ষক হওয়া।
মেয়েটির মা স্মৃতি রানী দত্ত বলেন, হৈমন্তী অন্যের বাসায় থেকে কাজের ফাঁকে লেখাপড়া করেছে। সেখানে রান্নাবান্না, কাপড় ধোয়াসহ সংসারের টুকিটাকি সব কাজই করেছে সে।
তিনি আর বলেন, এখন আমার কিছুই নাই। মেয়ের লেখাপড়া চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার জানান, হৈমন্তী ক্লাসের মধ্যে সবচেয়ে গরিব ছাত্রী। তার চেষ্টা তাকে সাফল্য এনে দিয়েছে। হৈমন্তীর পড়ালেখা চালিয়ে যেতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
আরএ