দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নিত্যপণ্যের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সমন্বিত খাদ্য সরবরাহ চেইন উন্নয়ন ও পরিবীক্ষণ কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
তিনি বলেন, এই কমিশন এখনকার সংস্কার কমিশন নয়। এ ধরনের কমিশন অন্যান্য দেশেও আছে। বাজারে পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য ঠিক রাখতে স্থায়ীভাবে এই কমিশন গঠন করতে হবে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত খাদ্যপণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান শীর্ষক নীতি সম্মেলনে তিনি এ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, খুচরা বাজারকে টার্গেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত সমস্যা যেহেতু অন্য জায়গায়। ওই দাওয়াইতে কাজ দিচ্ছে না। যারা ব্যবসা করছেন তাদের তথ্য উপাত্ত সরকারের জানা থাকতে হবে। তাদের লাইসেন্স থাকতে হবে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কিছু আইনগত পরিবর্তন আনতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন যে কাঠামো আছে তাতে একজন যতবড় হতে চান, তত বড় হতে পারেন। এটিতে কোনো বাধা নেই। বাজারে প্রভাব যাতে বিস্তার না করতে পারে সে জন্য আইনি সংস্কার দরকার। প্রত্যেককে ম্যান্ডেটরি লাইসেন্স করতে হবে। একজন ড্রিস্ট্রিবিউটর একজনের পণ্য বিপণন করে এটি বন্ধ করতে হবে। বড় গ্রুপ একটা পণ্যের পুরো সাপ্লাই চেইন কিনে নেয়।
বাংলাদেশে খাদ্য সরবরাহ চেইনের সংহতকরণ: স্বচ্ছতা, অধিগম্যতা, আইনি বিষয় ডিজিটালাইজেশন শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কিছু আইনি সংস্কার করা দরকার। একজন পরিবেশক শুধু একজনের পণ্য সরবরাহ করবে, এ সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। বাজারে পণ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগের সরকারে মতোই পদক্ষেপ নিতে হবে। আগের সরকারের মতোই এই সরকার উদ্যোগ নিয়েছে যা আমাকে মর্মাহত করেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনা উদ্যোগ যে কাজ করছে না এটাকে নীতির দুষ্টচক্র বলছি। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ালে মিডিয়া চাপ দিতে শুরু করেন। সরকার কিছু একটা উদ্যোগ তড়িঘড়ি করে নিতে যান। আবার ব্যবসায়ীরা চাপ দিচ্ছেন দাম বাড়াতে হবে। সরকার ডিউটি কমিয়ে দিচ্ছে। ফুড সাপ্লাই চেইনে যে নীতির দুষ্ট চক্র তৈরি হয়েছে তা ভাঙ্গা দরকার। এ জন্য আমাদের ফুড মার্কেট দরকার যার সঠিক অবকাঠামো থাকবে। এখানে রেজিট্রাড এজেন্টস ছাড়া কেউ কাজ করবে না। সঠিক জবাবদিহিতা নিয়ন্ত্রণ হবে।
সরকারের কাছে বাজারের পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত না থাকায় সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার বড় কারণ হলো, বাজারের পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সরকারের কাছে নেই। বার্ষিক উৎপাদন ও সরবরাহের তথ্য হয়তো জানা আছে, কিন্তু প্রাত্যহিক উৎপাদন ও সরবরাহের তথ্য সরকারের জানা থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশক ও সরবরাহের তথ্য স্থানীয় পর্যায়ে না থাকলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীদের কাছেও এ তথ্য থাকে। এরকম একটা পরিস্থিতি দিয়ে সরকারের পক্ষে কখনো বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাজার প্রসারিত হয়েছে, এর ওপর নিয়ন্ত্রণ কমেছে। তদারকির জায়গা কমেছে। এ কারণে বাজারে স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। বাজারে জবাবদিহিতার কাঠামোর ঘাটতির দুর্বলতা তৈরি হয়েছে। এ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। খাদ্যস্ফীতি রোগের উপসর্গ মাত্র, সমস্যা নয়। অনেক সময় উৎপাদন পর্যাপ্ত থাকার পরও বাজারে সংকট থাকে। চাহিদার হিসাবটাও আমাদের ঠিকঠাক হয় না। সরকারের কাঠামোর ভেতরে তা থাকতে হবে। সরকারের কাছে ব্যাপক ও সমন্বিত তথ্য-উপাত্ত থাকা দরকার।
কে