দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আতঙ্কে অনেকেই ঘর থেকে বেরোতেও ভয় পাচ্ছেন। সন্ধ্যার পর শহরাঞ্চলের অলিগলি ও রাস্তাঘাটে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। কোথাও কোথাও এসব ঘটনা সামাজিকভাবে প্রতিরোধের চিত্রও দেখা যাচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা সরকারের সমালোচনা করেও দিচ্ছেন পোস্ট। বেশ কয়েকদিন ধরেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাচ্ছেন কেউ কেউ। পদত্যাগের বিষয়ে আলটিমেটামও দেওয়া হয়েছে।
এমন বাস্তবতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কঠোর হচ্ছে সরকার। পদত্যাগের বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আপনারা দেখবেন আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অ্যাক্টিভিটিস অনেক বেড়ে গেছে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি। আপনারা সন্ধ্যার পর থেকেই টের পাবেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকাসহ সারাদেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। গত কয়েকদিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ফুটেজগুলো দেখে জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলমান। এছাড়া চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় ৫ আগস্টের পর যাদের নাম আসছে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এমনকি সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে আসা শীর্ষ সন্ত্রাসীরাদেরও নজরদারিতে আনা হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দোসররা এরই মধ্যে বেশকিছু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেছে। সেসব ফুটেজ গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তাদের চিহ্নিত করে দ্রুতই আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নাগরিকের নিরাপত্তাই রাষ্ট্রের নিরাপত্তা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক সংরক্ষিত এবং নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের রক্ষাকবচ। অন্য মানুষকে নিরাপদ রাখা ও বাঁচতে দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সম্প্রতি নাগরিকরা যে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে গুলি চলছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিকশাযাত্রী মা-বোনদের সবকিছু ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর দ্রুত সুরহা দরকার এবং যারা এসব করছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দরকার।
দেশের মহানগর ও আশপাশের এলাকাগুলোয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মহানগর এবং রেঞ্জের আওতাধীন এলাকাগুলোয় নানা ধরনের অপরাধের ঘটনা ও এর প্রতিকার চেয়ে করা মামলার সংখ্যা বাড়ছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত জানুয়ারি মাসে সারাদেশে মোট মামলা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৭২টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ঢাকা রেঞ্জে ২ হাজার ৩৭৮টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মামলা নথিভুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম রেঞ্জে ২ হাজার ১৯৯টি। এর পরের অবস্থানে থাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) মামলা নথিভুক্ত হয়েছে ১ হাজার ৭৯১টি। এরপর যথাক্রমে রাজশাহী রেঞ্জে ১ হাজার ৫৭৫টি, রংপুর রেঞ্জে ১ হাজার ৪৭৩, খুলনা রেঞ্জে ১ হাজার ৩৪৯, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৮৬৭, বরিশাল রেঞ্জে ৮৪৭ ও সিলেট রেঞ্জে ৭১১টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।
কে