সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি প্রাণনাশের হুমকি ও প্রতারণার অভিযোগে একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেন একজন ভুক্তভোগী নারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। সবশেষ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট (সিএমএম) আদালতে যৌতুক ও পারিবারিক সহিংসতা আইনে দুটি মামলা করেন তিনি। মামলার পর বেরিয়ে আসে বিয়ে ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে সর্বনাশ করার বিষয়টি।
জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের পরিচয় হয় অভিযুক্ত চিকিৎসক আবদুর রাজ্জাক খানের। অল্প দিনের পরিচয়ের পর মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে বিয়ে। এরপর স্বামী দাবি করে ঢাকায় দেখা করতে বাধ্য করে ভুক্তভোগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে। পরে তাকে ঢাকা থেকে বরিশালের বিভিন্ন রিসোর্টে রাখেন অভিযুক্ত চিকিৎসক আবদুর রাজ্জাক খান। সেখানে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কৌশলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীকে দীর্ঘ ছয় বছর নির্যাতন এবং ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক লোন করে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত আবদুর রাজ্জাক।
ভুক্তভোগী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, আবদুর রাজ্জাকের বাড়ি বরিশালে। তারা পরিবারসহ দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির এক নাম্বার গেটের পাশে নিজস্ব বাড়িতে বসবাস করেন। গ্রামে তেমন একটা যান না। বগুড়া মেডিকেল কলেজে পড়ার সময়ও সংঘর্ষে একাধিকবার হামলা শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে ৫ জুন ‘ডা. আব্দুর রাজ্জাক খান’ নামে ফেসবুকে একটি বন্ধুত্বের অনুরোধ আসে। চিকিৎসক দেখে বন্ধুত্বের আবেদন গ্রহণ করি। গ্রুপ ভিত্তিক পড়াশোনার করার কথা বলে বন্ধুত্বের অনুরোধ করে। এরপর মেসেজে কথা হওয়ার একপর্যায়ে ফোন নম্বর নেয়। এর মধ্যে পরিচয়ের সাত দিন পর ১২ জুন ভিডিও কলে কথা বলার আবদার। এভাবে দুই মাস কথা হওয়ার পর হঠাৎ একদিন বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রাথমিক পর্যায়ে রাজি হইনি। পরে তার জোরাজুরিতে রাজি হই। তখন অপরিচিত দুজনকে সাক্ষী বানিয়ে ভিডিও কলে বিয়ে করে।
ভুক্তভোগী বলেন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ৩১ জুলাই ঢাকায় আসেন আবদুর রাজ্জাক। ওই সময় জোর করে গোপালগঞ্জ ডেকে নেয়। সেখান থেকে বরিশালে ঘুরতে যাওয়ার নাম করে তিনদিন রাখে। ঢাকায় ফেরার পথে বলে ‘আমাদের এটাই প্রথম এবং এটাই শেষ দেখা’। আবদুর রাজ্জাক মাঝে মধ্যে ঢাকায় দেখা করতে আসার একপর্যায়ে হোটেল ও রির্সোটে উঠতে সমস্যা হয় দেখে সংসার ও সন্তান না চাওয়ার শর্তে ১৪ অক্টোবর খুলনায় একটি কাজী অফিসে নিয়ে রেজিস্টার করেন। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। ওই সময় তার প্রথম স্ত্রীর কথা আমি জেনে যাই। কিন্তু বিয়ে হয়ে যাওয়ায় চুপচাপ সব কিছু মেনে নেই। আমার (ভুক্তভোগী) বাবা চট্টগ্রামে আবদুর রাজ্জাকের বাসায় গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা মেনে নেবে না বলে জানিয়ে দেয়। তারপর থেকে বিভিন্ন রির্সোটে নিয়ে গিয়ে বেদম মারধর করত বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
রাজ্জাকের স্ত্রী চিকিৎসক উম্মে শারমিন বলেন, ‘আমার স্বামী আবদুর রাজ্জাকের সঙ্গে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অবৈধ সম্পর্ক ও বিয়ের বিষয়টি জানতাম। তবে, আমি তাদের কিছুই বলিনি। মেয়েটা নিজের দোষে সংসার করতে পারেনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক আবদুর রাজ্জাক খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়ের পর ফোন কলে বিয়ে করি। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার জন্য তাকে তালাক দিয়েছি। এ সময় ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণের কথা অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজেই ফ্ল্যাট কেনার জন্য আমার সঙ্গে ওটা নিয়ে পরামর্শ করে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।’
ভাটিয়ারীর ইউপি সদস্য সাব্বির আহমেদ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আবদুর রাজ্জাকরা এলাকায় কারো সঙ্গে মিশে না। গ্রামের বাড়িতে তার বড় ভাই ও বাবা থাকেন। ১৯৯২ সালে তাদের বাসায় মিটিং করার সময় রাজ্জাককে স্থানীয়রা মারধর করেন। তারপর থেকে এলাকায় তেমন যান না তিনি।
কে