দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কুমিল্লার খাদি। দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে খাদি হাতে বোনা বিশেষ এই কাপড়ের। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদ এলেই কদর বাড়ে আভিজাত্যের পোশাক খাদির। মিহি সুতায় দৃষ্টিনন্দন, আরামদায়ক ও দাম কিছুটা কম হওয়ায় এবারও তরুণদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী খাদি পাঞ্জাবি। তরুণীসহ মধ্য বয়সীদেরও পছন্দের তালিকায় এই খাদি পোশাক।
পাঞ্জাবি ছাড়াও খাদির শাড়ি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, শার্ট ও বিছানার চাদরসহ বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাক রয়েছে। নামীদামী ফ্যাশন শপে খাদি কাপড় আরও বৈচিত্র্য ও আকর্ষণীয় করে বাজারজাত করা হচ্ছে।
সরেজমিনে নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুর ও রাজগঞ্জের খাদি মিউজিয়াম, বিশুদ্ধ খাদি, নিপুণ খাদি ফ্যাশন, খাদি বিপণী, কুমিল্লা খাদি ভান্ডার, খাদি প্রিয়াঙ্গন, খাদি কুটির শিল্প ভবন, খাদি ইয়াছিন বস্ত্রালয়, কুমিল্লা খদ্দর, খাদি শিল্প ভবন, খাদি কটেজ, শিল্পী খাদি বিতান, খাদি বস্ত্র বিতান, পূর্বাশা গিফট অ্যান্ড খাদি-১, জ্যোৎস্না স্টোর, আজকাল খাদি ফ্যাশন, খাদি বসুন্ধরা, শুভেচ্ছা খাদি বিতান, আল আমিন খাদি ঘর, খাদি বস্ত্রালয় ও খাদি বস্ত্র বিতানসহ আশে পাশের খাদির দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, জমজমাট চলছে কেনাবেচা। প্রায় অর্ধশতাধিক খাদি দোকানে একই চিত্র দেখা গেছে।
প্রত্যেক দোকানে শৈল্পিক ডিজাইনের রুচিশীল পোশাক চোখে পড়েছে। প্রতিটি পিস রঙিন ও সাদা পাঞ্জাবির দাম সর্বনিম্ন ৪০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত, থ্রি-পিস ৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা এবং শর্ট ফতুয়া ৩৫০ থেকে ১২০০ টাকা, শাড়ি ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে খাদি কাপড়ের মধ্যে হাতে নকশা করা পাঞ্জাবির দাম একটু বেশি। এ ছাড়া বিছানা চাদর ও গায়ের চাদরসহ বিভিন্ন পোশাকের চাহিদাও রয়েছে। প্রতি পিস বিছানার চাদর বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং নকশি কাঁথা ১৮০০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
নরসিংদী থেকে কুমিল্লার বিশুদ্ধ খাদি ঘরে আসা ক্রেতা খাতেমুন জান্নাত ইভা বলেন, কুমিল্লার ঐতিহ্য বহন করে এ খাদির দোকানগুলো। খাদির কাপড়গুলো একটি আভিজাত্য বহন করে এবং অনেক সুন্দর ও আরামদায়ক। আমি আমার বাবার জন্য কিনেছি এবং স্বজনদের জন্য আরও কিছু কাপড় নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাধ ও সাধ্যের মধ্যে এতো সুন্দর ও আরামদায়ক পাঞ্জাবি শুধু খাদি কাপড়ের মধ্যে পাওয়া যায়। খাদির পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদ আমরা চিন্তা করতে পারি না। পরিবারের ছোট বড় সবার জন্যই আমরা খাদির পাঞ্জাবি কিনে থাকি।
রাকিবুল আলম নামে আরেক ক্রেতা জানান, খাদির কাপড় পড়তে খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ হয়। কুমিল্লাতে চাকরি করি, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য সবার উপহার হিসেবে খাদির পাঞ্জাবি নিয়ে নিলাম।
নগরীর কান্দিরপাড় আয়রা বুটিকসের স্বত্বাধিকারী শারমিন আহমেদ চৈতি বলেন, কুমিল্লা খাদি কাপড়ের জন্য বিখ্যাত, এর চাহিদা অনেক বেশি, তাই আমরা প্রতি ঈদে নতুনত্ব করে এ কাপড়কে আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি করে থাকি। খাদি কাপড়ের মধ্যে আমরা বিভিন্ন নকশা ও হাতের কাজ করছি, পাথরের কাজ করছি। খাদি কাপড়ের দেশ ও দেশের বাইরে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
নগরীর কান্দিরপাড় খাদি জোন্সার স্বত্বাধিকারী তপন কুমার পাল বলেন, তীব্র তাপদাহে খুব আরামদায়ক। শীতেও সহনীয় পোশাকটি ডিজাইনে এসেছে পরিবর্তন। দেশিয় নামীদামী ফ্যাশন শপে খাদি কাপড় আরও বৈচিত্র্য ও আকর্ষণীয় করে বাজারজাত করা হচ্ছে। এবারের ঈদেও চাহিদার শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লার খাদি।
কুমিল্লা খাদি বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও খাদি ঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কান্তি রাহা বলেন, অসহযোগ আন্দোলনের সময়কালে ২০২১ সাল থেকে ঐতিহাসিক কারণে এ অঞ্চলে খাদি শিল্প দ্রুত বিস্তার লাভ ও জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লায় চাহিদা বাড়ছে। খাদির দোকানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
আরএ