দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সাবেক উপদেষ্টা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুরোনো বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবে রাজপথে নেমেছিল ছাত্র জনতা। ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গেলেও সেই বন্দোবস্ত এখনো রয়ে গেছে কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে। তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এবং গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের পরই কেবল নির্বাচন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এনসিপির এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক দল গঠনের পর এটাই ছিল তার বরিশালে প্রথম সফর। পটুয়াখালীর দুমকিতে জুলাই শহীদের এক কন্যা ধর্ষিত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সেখানে যান তিনি। ফেরার পথে রাতে যোগ দেন বরিশালের এই মতবিনিময় সভায়। সভার শেষের দিকে অবশ্য এনসিপি কর্মীদের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় খানিকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন নাহিদ। পরে বহুকষ্টে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে স্থান ত্যাগে সহায়তা করেন এনসিপি কর্মীরা।
পটুয়াখালী ও দুমকীর কর্মসূচী শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ বরিশালে এসে পৌছান নাহিদ। অপেক্ষমান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল নূন্যতম সংস্কারের পর নির্বাচন দেওয়ার কথা বলছে। আমরা বলতে চাই যে নূন্যতম সংস্কার বলে কিছু নেই। সংস্কারের ভিত্তি এই সরকারের সময়েই করতে হবে। নির্বাচন করব বলেই রাজনৈতিক দল করেছি। তবে সেই নির্বাচনটি হতে হবে গণপরিষদ নির্বাচন। গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া নতুন সংবিধান বা সংবিধানের মৌলিক সংস্কার সম্ভব নয়। যারা পরিবর্তন চায়নি তারা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। পরিবর্তনের সঙ্গে যারা তাল মেলাতে পারবে না তারাও হারিয়ে যাবে। সেই পুরোনো রাজনীতি আমরা চাই না। আমরা সত্যিকার অর্থে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’ এসময় বরিশাল জাতীয় নাগরিক পার্টির ঘাটি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় এই আহ্বায়ক।
প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী প্রোগ্রাম চলার একপর্যায়ে সভাস্থলে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ। তারা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলা এবং বৈঠকের দাবি জানায়। তাৎক্ষনিকভাবে উপস্থিত অন্যরা তাদেরকে শান্ত করলেও কর্মসূচী শেষে নাহিদ ইসলাম চলে যাওয়ার উদ্যোগ নিলে তার তাকে ঘিরে ধরে। এরপর আবার তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সভাকক্ষে। এসময় মিলনায়তনে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের দু’টি পক্ষ। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কি হাতাহাতিও হয়। বর্তমানে বরিশালে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হয় এসময়। বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কথা বলতে চাইলে বাঁধা দেয়া এবং মেয়েদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগও করা এসময়। প্রায় ৩০/৪০ মিনিট ধরে এমন পরিস্থিতি চলার পর আবারও সভাস্থল ত্যাগ করার চেষ্টা চালান নাহিদ। এসময় ভূয়া ভূয়া বলে শ্লোগান তোলার পাশাপাশি তার গাড়ি আটকে দেয় বিক্ষুদ্ধরা। পরে বহু কষ্টে বাধা এড়িয়ে নাহিদ ইসলামকে গাড়িতে তুলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিয়ে দেয় এনসিপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
ঘটনা সর্ম্পকে জানতে চাইলে এনসিপির কর্মীরা বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসররা। আমাদের কর্মসূচীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে আজকের এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা তাদেরকে চিহ্নিত করে রেখেছি। পরিকল্পনা করেই তারা আজ এখানে এসেছিল।’
কর্মসূচীতে নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল হান্নান মাসুদ, ডা. তাসনিম জারা, আরিফুর রহমান আদীব এবং ডা. মাহমুদ আলম মিতুসহ অন্যান্য নেতারা।
এফএইচ/