দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ডাবল মার্ডারসহ একাধিক খুনের মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেনকে (ছোট সাজ্জাদ ওরফে বুড়ির নাতি সাজ্জাদ) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিও পোস্ট করেছেন সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না।
৫৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তামান্নাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার জামাই গতকাল রাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। এটা নিয়ে হাই-উল্লাস করার কিছু নাই। মামলা যখন আছে, গ্রেপ্তার হবেই। এগুলো নিয়ে এত দুঃখ প্রকাশ করে কান্নাকাটি করার কিছুই নাই। আপনারা যারা ভাবতেছেন আমার জামাই গ্রেপ্তার হয়েছে, আর কোনো দিন বের হবে না। ওদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। আমরা কাড়ি কাড়ি বান্ডিল বান্ডিল টাকা ঢেলে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে।’
ভিডিওতে সাজ্জাদের স্ত্রীকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। মাথায় রেখো। এত দিন আমরা পলাতক ছিলাম। এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। এখন আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমার কাছে আসবে। তখন আনা খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করছো তোমরা। শেষ করব আমরা। ঠিক আছে। সাজ্জাদের যারা সাপোর্টার আছ, তারা আমার জামাইয়ের জন্য দোয়া করবা। যাতে ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করিয়ে ফেলতে পারি।’
এর আগে শনিবার রাতে সাজ্জাদ হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। এরপর সাজ্জাদকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
সিএমপি সূত্রে জানা যায়, বিদেশে পলাতক আরেক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী হিসেবে এই সাজ্জাদ অপরাধজগতে পা রাখেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন অক্সিজেন অনন্যা, শীতলঝর্ণা, কালারপুল, হাটহাজারীর কুয়াইশ, নগরের চান্দগাঁও হাজীরপুল ও পাঁচলাইশ এলাকায় ১৫-২০ জনের বাহিনী নিয়ে দাপিয়ে বেড়ান সাজ্জাদ। চাঁদাবাজি, জমি দখল থেকে শুরু করে সেখানকার পুরো অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
এ ছাড়া গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার (৩২) ও মোহাম্মদ আনিস (৩৮) নামে দুজনকে হত্যা করা হয়। এই চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের ঘটনার দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগিদের আসামি করা হয়। গত ২১ অক্টোবর চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা এলাকার শমশের পাড়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৬) নামের এক যুবককে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে। মাইক্রোবাসে চড়ে এসে প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যান তিনি।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুলিশ তাকে খুঁজছিল। এই ঘটনায় থানায় তাকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকায় শটগান হাতে সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও দুজন গুলি করতে করতে একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করেন। এরপর ওই ভবন মালিকের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
এ ছাড়া গত বছরের ৫ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন মোড় এলাকার একটি সাততলা ভবনের পঞ্চম তলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে ধরতে অভিযানে যায় পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে যায় সাজ্জাদ। গুলিতে পুলিশের ২ সদস্যসহ মোট ৪ জন গুলিবিদ্ধ হন। এর পরও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
আরএ