দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নাটোরের গুরুদাসপুরে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে আধা ঘণ্টা পর বাবাও চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ঘটনাটি ঘটেছে গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দাদুয়া এলাকায়। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে শোক সইতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবা ৩০ মিনিট পরে মারা যান বলে জানা গেছে। মৃতরা হলেন- দাদুয়া গ্রামের ছাবেদ আলী (৫৮) ও তার ছেলে রাব্বানী হোসেন (৩৫)।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় দাদুয়া গ্রামের কবরস্থানে বাবা-ছেলেকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত প্রায় এক বছর পূর্বে শরীরে রক্ত শুন্যতায় ভুগছিলেন রাব্বানী। তারপর নাটোর, রাজশাহী ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ৯ মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৯ মাস চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়িতেই ছিলেন তিন মাস ধরে। বাড়িতে আসার কিছুদিন পর থেকে আবারও শরীরের রক্ত কমতে শুরু করে। শনিবার (১৫ ফেব্রয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার সময় রাব্বানি অসুস্থ হয়ে পরলে পরিবারের সদস্যরা তাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পথে নাটোর-রাজশাহী মহসড়কেই মৃত্যুবরণ করেন। ছেলে রাব্বানির মৃত্যুর খবর শুনে রাত সাড়ে ৯টার সময় বাবা ছাবেদ আলীও শোক সইতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করেন।
একইদিনে বাবা-ছেলের মৃত্যুতে আত্মীয়-স্বজন ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
রাব্বানির মা গোলেনুর বেগম জানান, ‘তার ছেলে রসূনের ব্যবসা করতো। ব্যবসায় লোকশান হওয়ার পর দুই বছর পূর্বে ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছিলেন। এক বছর চাকরি করার পরই তার শরীরে রক্তশুন্যতা দেখা দেয়। নিজেদের অর্থ-সম্পদ বিক্রি করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ করে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছিলেন। আশা ছিল ছেলে সুস্থ হলে আবার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবেন। তাদের ঘরে ছেলে রাব্বানি ও এক মেয়ে ছিল। মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেক পূর্বেই। রাব্বানির আয় রোজগার দিয়েই তাদের সংসার চলতো। রাব্বানির স্ত্রী ফিরতি বেগম (৩০), মেয়ে রিমি (৭), ছেলে সিয়াম (৪) ও তিনি স্বামী-সন্তানের মৃত্যুর পর অভিভাবক শুন্য হয়ে গেলেন। বাড়ির ভিটে-মাটি ছাড়া সম্পদ বলতে কিছু নেই আর। ছেলের বউ, ছোট ছোট দুইটি সন্তান নিয়ে কিভাবে জীবন-যাপন করবেন সেই দুঃশ্চিন্তায় পরে গেছেন তিনি।’
রাব্বানির স্ত্রী ফিরতি বেগম বলেন, ‘স্বামী-শ্বশুরকে হারিয়ে দিশেহারা তিনি। ছোট ছোট দুইটি সন্তান রেখে গিয়েছে রাব্বানি। জমানো সকল টাকা রাব্বানির চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে। শ্বশুর-সন্তানদের নিয়ে তিনিও দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন।’
আরএ