দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
সময় বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টা। বাগেরহাটের শরনখোলা উপজেলার চালিতাবুনিয়া গ্রামের একটি মাদরাসা সংলগ্ন মাটে স্থানীয়দের ভিড়। কয়েক মিনিটের মধ্যে আকাশ থেকে ভোঁ করে লোকজনের সামনে এসে নামল মেরুণ রঙের একটি হেলিকপ্টার। উৎসুক জনতা হেলিকপ্টারের আরও কাছে চলে আসেন। উড়ে আসা এই যান থেকে নামেন এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী মো. রাজু ফরাজী ও সৌদি নাগরিক আলসামারি সাদ্দাম জাহিদ। স্থানীয় বাসিন্দারা রাজু ও জাহিবকে স্বাগত জানান। এসময় ‘গুড বাংলাদেশ’ বলে অনুভূতি প্রকাশ করেন সৌদি নাগরিক আলসামারি সাদ্দাম জাহিদ।
সৌদি প্রবাসী রাজু ফরাজী সাউথখালী গ্রামের শাজাহান ফরাজীর ছেলে। তিনি ৮ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। রাজু দাম্মাম শহরের জুবাইল এলাকায় থাকেন। সৌদি আরবের ওই নাগরিক নাম আলসামারি সাদ্দাম জাহিব দাম্মাম শহরের জুবাইল এলাকায় থাকেন। রাজু প্রথমে তার কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন, বর্তমানে জাহিবের আস্থাভাজন হিসেবে জাহিদের সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
রাজু বলেন, কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের জুবাইল এলাকার বাসিন্দা আলসামারি সাদ্দাম জাহিদের মালিকানাধীন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে মালিকের (কফিল) সঙ্গে সুসম্পর্ক হয় রাজুর। বুধবার সাড়ে ৭ টার দিকে দাম্মাম থেকে বাংলাদেশ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন তারা। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে ঢাকা থেকে শরনখোলায় আসেন।
এদিকে প্রবাসী রাজুর সঙ্গে তার সৌদি মালিকের গ্রামে আসার খবরে সকাল থেকেই উৎসুক সিএসবি মাদ্রার পাশে মাঠে ভিড় করেন। সৌদি থেকে আসা নাগরিককে বরণ করতে নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। নিরাপত্তার জন্য শরনখোলা থানা পুলিশের একটি টিম দায়িত্বে নিয়োজিত থাকে। হেলিকপ্টার থেকে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে হইহুল্লোড় লেগে যায়। এ সময় স্থানীয় রাজু ফরাজীর বাবা শাজাহান ফরাজীসহ স্থানীয় লোকজন ফুলেল শুভেচ্ছা জানান আলসামারি সাদ্দাম জাহিদকে। এসময় বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদের রেপলিকা হাতে তুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সমাজ সেবক লিটন হাওলাদার বলেন, দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা যেন রাজুর মতো তাদের কপিলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখে এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
কপিল আলসামারি সাদ্দাম জাহিদ বলেন, রাজু অত্যন্ত ভালো ছেলে। আমি রাজুকে পছন্দ করি। রাজু আমার সকল ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশোনা করে। আমি রাজুর মতো আরও শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নিতে চাই। প্রথমদিন এখানে এসে অনেক ভালো লেগেছে। আমার পছন্দের একটি দেশ বাংলাদেশ। এ সময় গুড বাংলাদেশ বলে অনুভূতি প্রকাশ আলসামারি সাদ্দাম জাহিদ।
প্রবাসী রাজু ফরাজীর বলেন, আমার কফিল (মালিক) একজন ভ্রমণপিপাসু মানুষ। তিনি বাংলাদেশ খুব পছন্দ করেন। কাজ করার সময় প্রায়ই বলতেন, আমি তোমার দেশে যাব। তাই তাকে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা আগে থেকে চিন্তা করি তাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে গ্রামে যাব। সে জন্য ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে চলে আসি। তিনি এক সপ্তাহ বাংলাদেশে থাকবেন। বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন ও ষাটগম্বুজ ঘুরে দেখাব। পরে একসঙ্গে আবার সৌদিতে চলে যাব।
এফএইচ/