সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
টেবিলে সাজানো হরেক রকমের পিঠা, যার স্বাদ নিতে উন্মুখ হয়ে আছেন ভোজন রসিকরা। তবে সবারই নজর কেড়েছে ভিন্ন নামের কয়েকটি পিঠা। এর মধ্যে ‘মেয়েদের মন’, ‘বউ’ ‘ভালোবাসা ডটকম’ এবং ‘হৃদয় হরণ ও ব্যাকআপ’ পিঠা মানুষকে আকৃষ্ট করছে বেশি। কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গুরুদয়াল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের নিজ হাতে বানানো দুই শতাধিক পিঠা নিয়ে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী এই পিঠা উৎসব। ২৩টি স্টলে এসব পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে গুরুদয়াল সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর আ ন ম মুশতাকুর রহমান।
শিক্ষক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ মো. মতিউরের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. দিলীপ কুমার বড়ুয়া। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিন, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সম্পাদক মো. আজহারুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সিদ্দিকুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা পিঠার স্টলগুলো ঘুরে দেখেন।
পাটিসাপটা, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, মাংস পুলি, দুধ পুলি, নারকেল পুলি, দুধ চিতই, দুধ পোয়া, ঝাল পোয়া, মাল পোয়া, সেমাই পিঠা, ডিম পিঠা, মাংস-ঝাল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, জামাই পিঠা, রুট পিঠা, থামি পিঠা, অঙ্কন পিঠা, চিরুনি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, দুধ গুগল, বিস্কুট পিঠা, সমুচা পিঠা, ঝিলমিল পিঠা, ডিমের পুডিং, চিকেন চপ, প্রজাপতি পিঠা, চাপটি, টাকি পিঠা, চিতই, ডিম চিতই, দুধের সন্দেশ, ডোবা পিঠা, গোলাপ কাটা পিঠা, পাপড়ি পিঠা, মাংসের পুলি, পায়া পিঠা, শিমফুল পিঠা, অরেঞ্জ জেলি, বেলুনি পিঠা, গোলাপফুল পিঠা, ভ্যানিলা জেলি, মি ডুবা, শল পিঠা, দুধ পলি, সুখ চিতই, মলই পিঠা, বিস্কুট পিঠা, খাল মশলা পিঠা, টমেটো ঝাল পিঠা, কুড়িমুড়ি পিঠা, নারিকেলের চিড়া, মাংসের মশলা পিঠা, এম পিঠা, এহন সুপি পিঠা, মিষ্টি পিঠাসহ দুই শতাধিক পিঠা দেখা গেছে। একেকটির স্বাদ একেক রকম।
এর মধ্যে মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে মেয়েদের মন ২০ টাকা, ভালোবাস ডটকম, হৃদয় হরণ ও ব্রেক আপ। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বাঙালিয়ানা স্টলে মেয়েদের মন ২০ টাকা পিঠাটি রয়েছে। এই পিঠা খেতে এবং দেখতে দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন স্টলে।
এ ছাড়া কলেজের ডিগ্রি ডিপার্টমেন্টের স্টলে সাম্প্রতিক সময়ের কলকাতার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষের প্রচারিত একটি ডায়ালগ অনুসরণ করে ‘থাকবে না থাকবে না, একটি পিঠাও থাকবে না’ সম্বলিত একটি ফেস্টুন লাগিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। লুৎফুজ্জামান বাবরের ডায়ালগের সঙ্গে মিল রেখে ‘you are looking for Pithas’ এমন একটি ডায়ালগও দেখা গেছে। আর কলেজ শাখা বিএনসিসি প্লাটুনের স্টলে দেখা গেছে হৃদয় হরণ ও ব্রেক আপ পিঠা।
পিঠা উৎসব নিয়ে শিক্ষার্থী জয়া বিশ্বাস বলেন, আমাদের স্টলে ব্যতিক্রমী একটি পিঠা রয়েছে ‘মেয়েদের মন ২০ টাকা’। এটা দেখতে অনেকেই আমাদের স্টলে ভিড় করেছেন।
কলেজের শিক্ষার্থী শাপলা খাতুন বলেন, এত রকমের পিঠা, সব আমরা নিজ হাতেই বানিয়েছি। এ পিঠাগুলো তৈরিতে মাসহ অন্যদের সহযোগিতা নিয়েছি। অনেক পিঠার নাম আমরাও জানতাম না। এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা পিঠাগুলো বানানো শিখলাম। এমন আয়োজন আনন্দের। দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
পিঠা উৎসব দেখতে আসা ফারাজ বলেন, উৎসবের খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। এমন আয়োজন দেখে মন ভরে গেছে। বেশ কয়েক রকমের পিঠা খেয়েছি। প্রত্যেকটির স্বাদ আলাদা।
গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আ ন ম মুশতাকুর রহমান বলেন, এবার নিয়ে চারবার শীতকালে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। এবার ২৩টি স্টলে ২১৩ জাতের পিঠা রয়েছে। অভিভাবকদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা এসব পিঠা বানিয়েছে। এবার প্রতিটি স্টলেই নতুন নতুন পিঠা তৈরি করে নিয়ে এসেছে শিক্ষার্থীরা। আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য এসব নানা জাতের পিঠার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ আয়োজন। এ উৎসবটি শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে উপভোগ করছে। উৎসবে কলেজের বাইরের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষজনও উপস্থিত রয়েছেন।
অ