সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, একটা বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। সেই বিপ্লবের চেতনা সরকার ও বিএনপি ধারণ করতে পারেনি। সরকারের উচিৎ ছিল ক্ষমতায় বসার পর দেশে শুদ্ধি একটা অভিযান করা। তা না করে হঠাৎ পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে দিয়েছেন। তা বাড়ানোর আগে পরামর্শের প্রয়োজন ছিল।
শনিবার সন্ধ্যায় একটি সম্মিলিত সামাজিক প্রয়াস আস সিরাজ আয়োজিত ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ও ২০২৪'র গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ জুলাই বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনারে ময়মনসিংহ নগরীর অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, যেখানে গরীবের কষ্ট হবে না সে জায়গায় ভ্যাট বাড়ানো উচিত ছিল। ওষুধের ওপর কেন ভ্যাট বাড়ালেন, কারণ বিপ্লবের চেতনা ধারণ করতে পারেন নাই। এগুলো হলো এ সরকারের দুর্বলতা।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে যারা শহীদ হয়েছিলেন আমরা অনেকেই মনে করেছিলাম আন্দোলন বিফলে গেছে। কিন্তু না সেই আন্দোলনের বিজয় ২০২৪ সালে এসেছে, তাদের বিপ্লব সফল হয়েছে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাধ্যমে। সেই আদর্শ ধারণ করে ১১ বছর পর শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ভারতের সাম্রাজ্যবাদের পতন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি দেশ। কারণ যারা তাকে ফ্যাসিবাদ হতে সহায়তা করেছিল তারা এখন আওয়ামী লীগের বদলে অন্য দলের ওপর সওয়ার হবে। তাদের প্রতিহত করতে হবে। আমাদের বিভাজনের রাজনীতিকে কবর দিতে হবে। তার উত্থান হতে দেওয়া যাবে না। সেই জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো বিদেশি শক্তিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কুক্ষিগত করতে দেওয়া হবে না।
বিশেষ আলোচক সারজিস আলম বলেন, বছরের পর বছর ধরে খুনি হাসিনার মাধ্যমে নানাভাবে অত্যাচারিত হয়েছে এদেশের মানুষ। তার ক্ষমতার পিপাসার কাছে জিম্মি ছিল মানুষ, গোলাপগঞ্জের কাছেও জিম্মি হয়ে রয়েছিল এদেশের মানুষ।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি মানুষ জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে। হাসিনা খুনির দোসররা মাদরাসার ছাত্রকে দেখলে টার্গেট করে গুলি করত। তাই ছাত্ররা পাঞ্জাবি পাজামা না পড়ে টিশার্ট গায়ে দিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখে। শুধু মাদরাসা নয়, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। যারা হাসিনার দোসরদের ভয়ে আন্দোলনে যেতে পারেনি তারা তাদের স্ত্রী সন্তান এবং স্বজনদের আন্দোলনে যেতে সহযোগিতা করেছে।
সারজিস বলেন, এত জীবন ও রক্ত দেওয়ার আকাঙ্খা কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয়। আমরা আমাদের জায়গা থেকে যখন শহীদদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলি তখন তারা চায় খুনি হাসিনা দোসরদের বিচার। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ এখনো দেশ দোসরমুক্ত হয়নি। কারণ দেশের অনেক রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দোসরদের মদদ দিচ্ছে। কিন্তু যারা এমন করছে তাদের বিরুদ্ধে কেন কথা বলছি না। তাদের বিরুদ্ধে কথা না বলতে পারলে অভ্যুথানের কোনো সফলতা আসবে না।
তিনি বলেন, আজকে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট হচ্ছে। কারা করছে তাদের কথা কেন বলতে পারছি না। প্রত্যেকটা বাজারে চাঁদাবাজি জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে সরকারকে দোষারোপ করে কোনো লাভ নেই।
সারজিস আলম বলেন, খুনি হাসিনা হাজার হাজার পরিবারকে বিগত ১৬ বছরে উৎখাত করেছে। সে একদিনে খুনি হাসিনা হয়নি। যাকে টার্গেট করেছেন তাকেই মেরেছে। বিগত সময়ে কাউকে এমন হতে দিব কি না তা আমাদের ওপর নির্ভর করবে। খুনি শেখ হাসিনা যা করেছে তার ফলাফল ২৪’র অভ্যুত্থান। কেউ যদি ভুল পথে হাঁটেন তাদেরও পরিণতি এমন হবে।
আস সিরাজ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুফতি মুহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহাদী, ড. আতিক মুজাহিদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
এরপর শহীদ ১৫ জন পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন অতিথিরা। পরে জাগরণী সংগীত অনুষ্ঠিত হয়।
আরএ