সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
টানা দুই মাসের অস্থিরতা কাটিয়ে শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে সবজির বাজার। শীতকালীন শাক-সবজির আসতে শুরু হওয়ায় কুমিল্লা নগরীর কাঁচা বাজারে সব ধরনের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। এতে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত সবজি আসতে শুরু করেছে। এর ফলে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। তবে পুরাতন আলুর দাম অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত আলুর দাম বাড়তি থাকবে বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
নগরীতে মাছ, মাংস, ডিম, মুরগির বাজার গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে দাম না বাড়লেও তা উচ্চ মূল্যে স্থির হয়ে আছে। শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, টমছম ব্রিজ, রাণীর বাজার ও বাদশাহ মিয়ার বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গিয়েছে।
এদিন রাজগঞ্জ বাজারের সবজি বিক্রেতা হানিফ মিয়া বলেন, ‘শীতকালীন শাক-সবজির আসতে শুরু করেছে। এর ফলে বাজারে বেশিরভাগ শাক-সবজির দাম কমেছে। আগামী সপ্তাহে আরও কমতে পারে। কারণ শীতকালীন সবজি আসা শুরু হয়েছে মাত্র। শীতকালীন শাক-সবজির ভরা মৌসুমে এখনও শুরু হয়নি।’
আরেক সবজি বিক্রেতা করিম হোসেন বলেন, ‘সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে গাজর, টমেটো ও কাঁচা মরিচসহ কয়েকটি সবজির দাম আগের মতোই আছে। আর বাজারে আলু না আসা পর্যন্ত কিছুটা বাড়তি থাকবে।’
শুক্রবার বাজারে কুমিল্লা নগরীতে কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা, আলু প্রতি কেজিতে ৫-৭টা বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ধনিয়া পাতা ২০০-২৫০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি মাঝারি আকারের ৫০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, শিম ৮০-১০০ টাকা, কচুর মুখী ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, পটল ও ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এদিন ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিস্টি কুমড়া ৪৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৪০-৫০ টাকা, এছাড়া প্রতি আঁটি লাউশাক ২৪-৩০ টাকা, পুঁইশাক, মুলা শাক ও লাল শাক ১৫-২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। লেবু মাঝারি আকারের ২০-২৫ টাকা হালি বিক্রি হতে দেখা যায়।
এদিকে, বাজারে পেঁয়াজ ১১০-১১৫ টাকা, রসুন ২২০-২৪০ টাকা, আদা ২০০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কথা বিবেচনা করে হলেও বাজার মনিটরিং দরকার। ক্রেতাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের দোহাই দিয়ে ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে বাজার করতে আসা আকবর হোসেন বলেন, সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এটা স্বস্তির খবর। তবে, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন অযুহাতে টাকা বাড়িয়ে রাখছে বলে মনে হচ্ছে। নিয়মিত মনিটরিং করলে বাজারের দাম এমন থাকতো না।
ইবরাহীম মোল্লা নামের আরেক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কমতে শুরু করলেও মাছ মাংসের দাম তো কমেনি। পেয়াজ, আলুর দামও বেশি। একটা কমলে আরেকটা বেড়ে যায়। এগুলো সিন্ডিকেটের কারসাজি। আমরা ক্রেতারা আর শান্তি পেলাম না। কবে সিন্ডিকেট বন্ধ হবে আর আমরাও স্বস্তিতে ব্যাগ ভরে বাজার নিয়ে যেতে পারবো।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন ‘প্রতি কেজি সবজিতে আমরা মাত্র ২-৫ টাকা লাভ করি। কারা দাম বাড়ায়-কমায় আপনারা খোঁজ নেন। দামের বাড়ানো বা কমানোর ওপর আমাদের হাত নেই।’
এছাড়াও, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। বাজারে ফার্মের বাদামি রঙের ডিম ডজন প্রতি ১৫০-১৫৫ টাকা, ফার্মের মুরগির সাদা ডিম ১৪৫-১৫০ টাকা, হাঁসের ডিম ৮০ টাকা হালি, কোয়েল পাখির ডিম ৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। আবার, ব্রয়লার ১৯০-২০০ টাকা কেজি, সোনালি জাতের মুরগির দাম ৩১০-৩২০ টাকা কেজি এবং লেয়ার মুরগি ৩১০-৩২০ কেজি দরে দরে বিক্রি করছি। তবে বাজার ভেদে সব ধরনের শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-২০ টাকা পর্যন্ত কম বেশি হতে পারে।
জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বলেন, ভোক্তাদের স্বার্থে আমরা মনিটরিং কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করছি। কেউ দাম বেশি রাখলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাধারণ মানুষ বলছেন, ভোক্তা আসার আগেই বাজারে খবর হয়ে যায়। তখন আসার পর তেমন কেন প্রভাব পড়ে না। বাজার মনিটরিংয়ে তেমন লক্ষ্যনীয় নয়।
আরএ