সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে গাজীপুরে মামলা হয়েছে। নূর আলমের বাবা আমির আলী (৪৪) বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৬ জনকে নির্দেশদাতা এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভেকোট আজমত উল্লাহ খান ও গাসিকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ উপস্থিত থেকে হামলাকারীদের হুকুম ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতার কথা উল্লেখ রয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) বাসন থানায় এ মামলা রুজু হয়।
মামলার বাদী আমির আলী কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া (মধ্য কুমরপুর) গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৮নং ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকায় ডাক্তার নাহিদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) বাসন থানার ভাপরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক এমপি সিমিন হোসেন রিমি, মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক প্রথামকি ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভেকোট আজমত উল্ল্যাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতিসহ ১৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০-১৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী আমির আলী এজাহারে উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৬ জনের নির্দেশ অনুযায়ী আসামিরা গত ২০ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের তেলিপাড়ার হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে সড়কে অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে। হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করেছেন ও ধারালো দা দ্বারা কুপিয়ে খোরশেদ আলম রশিদসহ (১৯) প্রায় ২৫-৩০ জন আন্দোলনকারীদের রক্তাক্ত জখম করেন। এক পর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভেকোট আজমত উল্লাহ খান ও গাসিকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ উপস্থিত থেকে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়িতে শুরু করে। ওই সময় তাদের ছোড়া গুলিতে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নূর আলমের (২২) ডান চোখের ওপর দিয়ে গুলি ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে নূর আলম নিহত হন।
ঘটনার পর ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে শোকাহত হয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কোনো আইনি সহায়তা না নিয়ে তাৎক্ষণিক ছেলের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান এবং দাফন সম্পন্ন করেন। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এবং বিবাদীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে দেশের বিদ্যমান অরাজক পরিস্থিতির কারণে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দিতে বিলম্ব হয়।
এফএইচ