সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজারে মনু ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় শহরের মনু সেতুর কাছে চাঁদনীঘাটে মনু নদের পানি ১৯ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার এবং সদর উপজেলার শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর পানি ১৭সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনা এলাকায় কুশিয়ারার পানি উপচে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদে প্রবেশ করেছে। এ এলাকায় কুশিয়ারার স্থায়ী প্রতিরক্ষা বাঁধ নেই। গ্রামীণ সড়কটিই প্রতিরক্ষা বাঁধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নতুন করে ভাঙনের ফলে আশপাশের গ্রামগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। বিকেলে এলাকার জনগন স্বেচ্ছায় বালির বস্তা দিয়ে মেরামত করায় কয়েকটি ঘর-বাড়ি স্রোতের কবল থেকে সাময়িক রক্ষা পেয়েছেন। তবে পানি বাড়লে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে এমনটাই জানিয়েছেন এলাকার লোকজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত থেকে মৌলভীবাজারে মনু, কুশিয়ারাসহ জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। মনু নদের পানি মৌলভীবাজার শহরের মনু সেতুর কাছে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। একই জায়গায় আজ সন্ধ্যা ৭টায় বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে সদর উপজেলার শেরপুরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় কুশিয়ারা নদীর পানি ছিল ৮ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের শেরপুরের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি ঢুকছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালের দিকে হামরকোনা মসজিদের কাছে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে গ্রামের ভেতর পানি প্রবেশ করছে। ধলাই নদের পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদীর পানি অনেক দিন ধরেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ সন্ধ্যা ৭টায় জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিকেলে খলিলপুর ইউনিয়নের হামরকোনার ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ২০ ফুট জায়গা ভেঙে গেছে। ভাঙ্গা স্থানে স্বেচ্ছা শ্রমে বালির বস্তা দিয়ে মেরামত করছেন । স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, পানিপ্রবাহ বন্ধ করায় হামরকোনা, ব্রাহ্মণগ্রাম ও শেরপুর বাজারের প্লাবিত হওয়ার আশংকা কমেছে।
পাউবো মৌলভীবাজার সুত্রে জানা গেছে, খলিলপুর ইউনিয়নের যেদিকে বাঁধ ভেঙে কুশিয়ারা নদীর পানি গ্রামে ঢুকছে, সে এলাকায় পাউবোর কোনো বাঁধ নেই। একসময় প্রতিরক্ষা বাঁধ হলেও এটি এখন মূলত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি গ্রামীণ সড়ক। কুশিয়ারা নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপরে উঠলে বাঁধটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে এলাকায় পানি ঢোকে।
পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘কুশিয়ারার পানি বাড়াটা ভয়ের। কুশিয়ারায় পানি বাড়লে মনুনদী পানি ও হাকালুকি হাওরের জলাবদ্ধতা কমবে না। কুশিয়ারা নদীর খলিলপুর এলাকায় পাউবোর স্থায়ী কোনো বেড়িবাঁধ নেই। হামরকোনায় এলজিইডির রাস্তা ভেঙে খলিলপুর ইউনিয়নে পানি ঢুকছে। ভাঙা মেরামতের জন্য বালুভর্তি এক হাজার সিন্থেটিকের বস্তা পাঠিয়েছি।
মনুনদীর পানি বৃদ্ধিতে মৌলভীবাজার পৌরসভার ১ ও ৬ ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া হাকালুকি হাওর পাড়ের কুলাউড়া পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড ৫ টি ইউনিয়ন জুড়ি ২ ইউনিয়ন ও বড়লেখা উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের জলাবদ্ধতার অবনতি হয়েছে।
এফএইচ