সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুক্তভোগীরা। তারা দাবি জানিয়ে বলেন, গ্রাম ও শহরের বিদ্যুৎ বৈষম্য দূর করা, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে আরইবি-পিবিএস'র বিদ্যমান সংকট নিরসনে সংস্কারের মাধ্যমে দ্বৈতনীতি পরিহারপূর্বক একীভূতকরণ, চুক্তিভিত্তিক অনিয়মিতদের চাকরি নিয়মিতকরণ, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক দমন-পীড়ন ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ অঞ্চলে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের বিদ্যুৎ সেবায় নিয়োজিত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি, নিম্নমানের মালামাল ক্রয় ও নন-স্ট্যান্ডার্ড লাইন নির্মাণের কারণে সৃষ্ট গ্রাহক ভোগান্তি, মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সব ধরনের পলিসি প্রণয়নসহ আরইবি-পবিস দ্বৈত ব্যবস্থাপনা নিরসনে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং জরুরি সেবায় নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক, অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের দুই দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করা হয়।
তারা বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কোনো ধরনের কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও আরইবি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ভুল বার্তা দিয়ে পরিকল্পিতভাবে গত ১৬ অক্টোবর আরইবি কর্তৃক পবিসের ১০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত এবং একই তারিখ দিবাগত রাতে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের করা হয়।
বক্তারা বলেন, প্রায় ৩ মাস কারাভোগের পর বর্তমানে আমরা জামিনে মুক্ত আছি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এতো বড় ট্র্যাজেডি ঘটানোর পরও আরইবি থেমে থাকেনি। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত, স্ট্যান্ড রিলিজ, ওএসডি এবং নিজ জেলা থেকে গড়ে ৫০০/৬০০ কিলোমিটার দূরে হয়রানিমূলক বদলিসহ নানান শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চলমান রেখেছে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে এক মাসে প্রায় ৫ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। এছাড়া চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের মধ্যে লাইন ক্রু লেভেল-১ এবং বিলিং সহকারীদের চাকরি নিয়মিত করা হলেও মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার এবং লাইন শ্রমিকদের চাকরি নিয়মিত করা হয়নি। মিটার রিডাররা যদি চুক্তিভিত্তিতে ৩৬ বছর চাকরি করতে পারে তাহলে তাদের নিয়মিত না করা অযৌক্তিক। বেতন-ভাতা বৃদ্ধি না করেও বিদ্যমান কাঠামোতে তাদের চাকরি নিয়মিত করার সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া লাইনম্যানের বিকল্প হিসেবে একই কাজ করা সত্ত্বেও লাইন শ্রমিকদের চাকরি নিয়মিত করা হয়নি। কিছু সংখ্যক নিয়মিত করায় বঞ্চিতদের মধ্যে চরম অসন্তুষ্টি বিরাজ করছে। সর্বশেষ গতকাল পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একজন বিলিং সহকারীকে ফেসবুক পোস্ট, লাইক, কমেন্টের কারণে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একটা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কি পরিমাণ কর্মী নিপীড়ন হতে পারে তার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে যাচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।
তারা বলেন, আমরা দীর্ঘ ৪৭ বছরের পুরোনো মডেল সংস্কারপূর্বক দ্বৈতনীতির অবসান চেয়েছি, সরকারের প্রতি আস্থা রেখে সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। তথাপি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক মামলা, চাকরিচ্যুতি, হয়রানিমূলক বদলিসহ দমনপীড়ন ও নির্যাতন অব্যাহত রাখা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোতে পুনরায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আরইবি'র এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য সরকারের নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। এ বিষয়ে গত ২০ জানুয়ারি বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বরাবর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩০ হাজার কর্মীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়েছে, যার অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎ সচিবকে দেওয়া হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পল্লী বিদ্যুতের এজিএম ও ভুক্তভোগী কর্মকর্তা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আব্দুল হাকিম, মো. সালাহউদ্দিন, ডিজিএম ও ভুক্তভোগী কর্মকর্তা মো. রাহাত, আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া প্রমুখ।
আরএ