সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ডিবি হেফাজত থেকে মুক্ত হয়েই সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজত থেকে মুক্তি পান তিনি।
তার পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
'কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেফতার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না ৷ আপনারা কথা রাখেননি ৷ আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর আঘাত করেছেন ৷ সারাদেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের উপর লাঠিচার্জ করেছেন ৷ যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন ৷ আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবা'কে হুমকি দিয়েছেন ! মাশরুর তার উদাহরণ ৷ যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারেনা, গ্রেফতারের ভয়ে থাকে ৷ এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি ৷ এমন তো হওয়া উচিৎ ছিল না !
কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেন ৷ সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুর সহ আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী ৷ রিক্সা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন ৷ আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন ৷ কি ভাবছেন ? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে ?
৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আটকে রাখবেন? দূর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কিভাবে নিবৃত করবেন?
পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি ৷ এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের উপর নয়, পুলিশের উপর নয় ৷ এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার উপর ৷ যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার উপর ৷ ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নিব ৷
এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই ৷ যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে ; গণগ্রেফতার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে ; ততদিন এ লড়াই চলবে ৷’
উল্লেখ্য, সমন্বয়কদের মধ্যে প্রথমে তিনজনকে গত শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তারা হলেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের। পরদিন সন্ধ্যায় (২৭ জুলাই) সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর (২৮ জুলাই) রোববার ভোরে মিরপুরের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে নুসরাত তাবাসসুমকে। আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজত থেকে সারজিসসহ ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দেওয়া হয়।