সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
পরিষেবাতে বাণিজ্য সংক্রান্ত সাধারণ চুক্তি গ্যাটসের ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে ধুমপানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তামাকের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৭ কোটি ৬২ লাখ মানুষ। এর মাঝে ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হয়।
সোমবার ( ১৫ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনে (বিএমএ) আয়োজিত ২০৪০ সালে তামাকমুক্ত বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে আমাদের করনীয় শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য দেওয়া হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন,, বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। তাই এই অকাল মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমরা দেখি যে, হাসপাতালগুলোর ক্যান্টিনগুলোতে ধূমপানের একটা বড় আয়োজন থাকে। অথচ এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চাইলেই বন্ধ করে দিকে পারে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে যদি ধূমপান-তামাক নিষিদ্ধ করা যায়, তাহলে রোগীদের জন্যও সুচিকিৎসা পেতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের আর্থিক ও যেসব স্বাস্থ্য ক্ষতি হয়ে থাকে-
১. দেশের ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রাপ্তবয়স্ক ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ মানুষ তামাক ব্যবহার করে।
২. পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ ।
৩. তামাকের ব্যবহারে পঙ্গুত্ব বরণ করে ৩ লাখ ৮২ হাজার মানুষ।
৪. বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ৬টির সাথেই তামাক জড়িত।
৫. বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী তামাক ব্যবহারকারীদের তামাকজনিত রোগ যেমন ফুসফুসে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশের বেশি। এছাড়া তামাকজনিত অন্যান্য ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ১০৯ শতাংশের বেশি।
৬. টোব্যাকো অ্যাটলাসের ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মারা যায়। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের তথ্যে বছরে মোট মৃত্যুর ১৯ শতাংশ তামাকের কারনে হয়ে থাকে।
৭. ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ব্যায়ের পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, অথচ একই সময়ে (২০১৭-১৮) তামাকখাত থেকে সম্পূরক শুল্ক ও মূসক বাবদ অর্জিত রাজস্ব আয়ের পরিমাণ মাত্র ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। নীট ব্যায় প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে ৬টি দাবি উপস্থাপন করা হয়:
১. ধূমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত করা।
২. বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন বন্ধ করা।
৩. তামাক কোম্পানির সিএসআর বন্ধ করা।
৪. খুচরা শলাকা ও তামাকদ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করা।
৫. ই সিগারট বা এইচটিপি নিষিদ্ধ করা।
৬. প্যাকেট বা কৌটায় সচিত্র সতর্কবার্তার আকার ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ করা।
এসময় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. এহতেশামুল হক বলেন, বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। তাই এই অকাল মৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এর সভাপতি জনাব রাশেদ রাব্বির সঞ্চালনায় সেমিনারে শুভেচ্ছা ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন ডরপের প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা এএইচএম নোমান, লীড পলিসি এডভাইজার, সিটিএফকের সাবেক সচিব এবং, বিসিআইসির চেয়ারম্যান, মো: মোস্তাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইল জেলা সমিতির সভাপতি ড. মোঃ ইব্রাহীম হোসেন খান প্রমুখ।
এফএইচ