সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
রাজধানীর দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট মানদণ্ডের চেয়ে বেশি। ওই ওয়ার্ডগুলোতে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ দাউদ আদনান।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে-২০২৪ এর ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জরিপের তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
কর্মশালায় জরিপের ফলাফল ঘোষণায় শেখ দাউদ আদনান বলেন, রাজধানীর দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঢাকার দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৪৯টি বাসায় জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, শতকরা ১৫ শতাংশ বাড়িতে এডিসের লার্ভা ও পিউপার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মিরপুর, বনানী, নিকেতন, হাতিরঝিল, মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত, মালিবাগসহ গতবারের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোই সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এডিসের ঘনত্ব সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ পাওয়া গেছে বহুতল ভবনে। এরপরই স্বতন্ত্র বাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভার হার ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণের ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ঢাকা দক্ষিণের ১৪ দশমিক ৩০ শতাংশ পরিত্যক্ত পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে—ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১২, ১৩, ২০, ৩৬, ৩১, ৩২, ১৭ ও ৩৩ নম্বর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৩, ০৪, ৫২,৫৪, ১৬, ৩০, ০৫, ১৫, ১৭ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মৌসুম পূর্ব জরিপে উভয় সিটি করপোরেশনেই এডিসের লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। তাই লক্ষণ প্রকাশপেলেই সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে আসার আহ্বান জানান তিনি।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, সারা দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। রোগীর লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে রোগটি যেন না হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় পৌনে ৩ হাজার মানুষ। এই সময়ে রোগটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। যেখানে গত বছরের ২৭ মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছিল ১৭০৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। এই পরিসংখ্যানই বলছে এবারের ডেঙ্গু কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, অনেকেই মনে করেন ঢাকায় ভালো চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব। তাই জেলা বা উপজেলা হাসপাতাল থেকে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন। দীর্ঘ যাত্রা পথে শরীরে জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং পথেই মৃত্যু বরণ করেন।
মহাপরিচালক বলেন, ডেঙ্গুতে যেন মৃত্যু না হয় সে জন্য আমরা দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। প্রয়োজনীয় স্যালাইন ও আনুষঙ্গিকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাণহানি এড়াতে বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের সমন্বিত চিকিৎসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. এম এম আক্তুরুজ্জামান প্রমুখ।
এফএইচ