সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
মোবাইল ফিক্সার সিইও সজিব জমাদ্দার ওরফে আহমেদ বিন সজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রাজধানীর মোতালিব প্লাজার এক ব্যবসায়ী গত ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার দুদকে এই অভিযোগটি জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সজিব একজন মধ্যবৃত্ত পরিবারের ছেলে। তাঁর পিতা সালাম জমাদ্দার একজন ড্রাইবার ছিলেন। সজিবের জম্মস্থান মাদারীপুর হলেও তার পিতা সালাম জমাদ্দার জম্মস্থান জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী দেখানো হয় মধ্য বাড্ডায়। বিগত ৪/৫ বছর আগে রাজধানীর হাতিরপুল মোতালিব প্লাজা শপিং কমপ্লেক্সে বিভিন্ন দোকানে মোবাইল ইলেট্রেশিয়ান হিসেবে চুক্তি ভিক্তিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
সাম্প্রতিক সময়ে সজিব জমাদ্দারের বেশ কিছু বিলাসী কর্মকাণ্ড ও বিলাসবহুল গাড়ির সমাহার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা রীতিমতো হাতিরপুল মোতালিব প্লাজা মার্কেটের দীর্ঘদিনের পুরোনো ব্যবসায়ীদের মাঝে হইচই ফেলে দিয়েছে।
মার্কেটের পুরোনো ব্যবসায়ী যখন বৈধভাবে ব্যবসা করে ভাঙা সাইকেল ও মোটরসাইকেল নিয়ে মার্কেটে আসেন ঠিক সেই সময়ে চার বছরে সজিব জমাদ্দার মাজেন্ডা ব্র্যান্ড ও হ্যারিয়ার ব্র্যান্ড ও স্পোর্টসের মতো বিলাস বহুল গাড়ি নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ করেন।
লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সজিব জমাদ্দার প্রতিটি গাড়ি নিজ নামে ক্রয় করেছেন। যার গড় মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা। সজিব নিজ নামে কোম্পানিও খুলেছেন। যার নাম দিয়েছেন মোবাইল ফিক্সার। এরই মধ্যে সজিব নিজ কোম্পানির নামে মোতালিব প্লাজা শপিং কমপ্লেক্সে ৮টি দোকান ভাড়া নিয়েছেন।প্রতিটি দোকান ভাড়া নিতে এ্যাডভান্স বাবদ সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। শুধু মোতালেব প্লাজায় নয় বসুন্ধরা সিটি এবং যমুনা ফিউচার পার্কেও দোকান রয়েছে তার। সব দোকান ভাড়া বাবদ এ্যাডভান্স করেছে মোট তিন কোটি টাকারও বেশি।
অভিযোগে আছে হয়েছে, সজিব মোতালিব প্লাজায় নিজস্ব আলিশান ফ্ল্যাটে থাকেন। সজিব ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদির মাধ্যমে সমালোচিত সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের সাথে সক্ষতা গড়ে। বিভিন্ন সময়ে ডিবি সদস্যদের দ্বারা জব্দকৃত মোবাইল সজিব নিয়ে এসে টার্স ডিসপ্লে খুলে অধিক দামে বিক্রি করে রাতারাতি শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। শুধু রাজধানীতে নয় সজিব তার নিজ এলাকায়ও করেছেন বিলাস বহুল বাড়ি, ক্রয় করেছেন অনেক জায়গা জমি।
ক্ষমতাসিন আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন সময়ে মাদারীপুরের সাবেক নৌ-মন্ত্রী শাহজাহান খানের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় গড়েছেন অঢেল সম্পদ। রাজধানী ঢাকাতে সজিব বিতর্কিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ছত্রছায়ায় চলতেন। গোলাম রাব্বানীর নাম পরিচয় ব্যবহার করে সজিব ইতিমধ্যে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সজিব ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কারণে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যৌক্তিক আন্দোলনকে প্রতিহত করতে গোলাম রাব্বানীর দলকে মোটা অংকের টাকাও দিয়েছেন বলে শোনা যায়।
সজিব মোবাইল ফিক্সার নামে যে কোম্পানিটি খুলেছেন যা লিমিটেড বলা হলেও আদৌ সেটা লিমিটেড কি না, আদৌ সেটা সরকারী সকল নিয়ম নীতি মেনে পরিচালনা করছে কি না তা দুদকের অভিযানে প্রতিয়মান হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।
দুদকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় সজিব জমাদ্দার ওরফে আহমেদ বিন সজিবের সঙ্গে। তবে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে বা ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সারা পাওয়া যায় নি। অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
মোবাইল ফিক্সারে প্রতিটি শো-রুমে হিউজ আইফোন সিক্সটিন থাকা নিয়ে বিটিআরসির উপ-পরিচালক গোলাম সারোয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন” আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি বসুন্ধরা ও যমুনা ফিউচার মার্কেটে হিউজ আইফোন সিক্সটিন ঢুকে যার বাজার মূল্য ২ লক্ষের ও অধীক খুব অল্প সময়ে বিপুল পরিমান মোবাইল কিভাবে আমাদের দেশের মার্কেটে এসেছে সবাই প্রতিটি মোবাইলে সঠিক ইনকাম টেক্স দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে বিটিআরসি কাজ করছেন খুব শীর্ঘই ঐসকল মার্কেটে র্যাব ও বিটিআরসি একটি যৌথ অভিযান হবে বলে জানান তিনি।
সজিবের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ এর বিষয়ে দুদকের এক তদন্ত কর্মকর্তা জানান,আমাদের কাছে মোবাইল ফিক্সার সিইও সজিবের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে একটা অভিযোগ এসেছে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।