দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন চার আসামির কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের ৬০ হাজার টাকার মধ্যে ৫৯ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। থানার ওসির নির্দেশে গত বুধবার এক ভুক্তভোগীর বাবা মোনায়েম হোসেনকে ডেকে ঘুষের ওই টাকা ফেরত দেন উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি একটি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ধরে এনে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পান চারজন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে থানা-পুলিশের।
জানা যায়, গত বছরের ১ অক্টোবর ভোর রাতে জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত নৈশপ্রহরী আরমানকে হত্যা করা হয়। নিহত মো. আরমান স্থানীয় বাসিন্দা মো. লোকমান হেকিমের ছেলে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর সে জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী হিসেবে যোগদান করে কর্মরত অবস্থায় নিহত হন। আরমান হত্যার বিষয়টি নিয়ে ঘটনার দিন রাতেই মা শামছুন নাহার ওরফে ঝরনা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দিনেই আরমান হত্যার প্রধান আসামি ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার মাসুদ রানা আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। মামলার আর কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে আরমান হত্যায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি থানার ওসি ওবায়দুর রহমানের নির্দেশনায় এসআই নজরুল ইসলাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফ বিল্লাহ (৪৬), রিফাতুল ইসলাম (২৩), বাবুল মিয়া (২১) ও রোমান মিয়া (২০) নামের চারজনকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠে। এক পর্যায়ে আটকদের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় আরমান হত্যা মামলায় তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। আটক তরুণ বাবুলের বাবা মোনায়েম হোসেন হত্যা মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলামের সঙ্গে ৬০ হাজার টাকা রফাদফা করে পরিশোধ করেন। পরে আটক চারজনকে পরদিন রাতে মুক্তি দেওয়া হয় বলে দাবি ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যদের।
টাকা ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী বাবুলের বাবা মোনায়েম হোসেন বলেন, ‘হঠাৎই এসআই নজরুল কল দিয়ে বাজারে আসতে বলে। পরে বাজারে এসে দেখা করলে হাতে ৫৯ হাজার হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়। বলে টাকা লেনদেনের বিষয়টি যেন কারো কাছে স্বীকার না করি।’
এ প্রসঙ্গে ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের কাছে ঘুষের টাকা ফেরতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সরাসরি কথা হবে।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। হলে হতেও পারে।’
আরএ