সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
দিনাজপুরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিচয়ে বাবা-ছেলেকে অপহরণে এবং চাঁদাবাজি করার সময় কোতয়ালী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাককে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুরপাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আব্দুর রাজ্জাক সদর উপজেলার নহনা গ্রামের রুস্তম আলির ছেলে ও আপেল একই এলাকার শাহাদতের ছেলে।
এই ঘটনায় শুক্রবার শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আব্দুর রাজ্জাককে ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় সংসদ।
চাঁদাবাজি, অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভাটিনা ঠাকুরবাড়ী এলাকার মৃত নির্ভয় বর্মনের ছেলে চৈতু বর্মন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নহনা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে শাহীনুর ইসলাম, আপনের ছেলে শান্ত, সাহাদুলের ছেলে আক্তারুল, শ্রী উজ্জ্বল রায়, শ্রী তাপস রায় ও শ্রী মহেশ চন্দ্র রায়।
মামলা, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৈতু বর্মণের ছেলে ইমন চন্দ্র বর্মণের (২২) সঙ্গে একই গ্রামের মিতু রানি রায়ের (১৯) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে টাঙ্গাইলে অবস্থান করছিল। এই ঘটনার জেরে গত ৭ জানুয়ারি আব্দুর রাজ্জাকসহ তার সঙ্গীয় লোকজন মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পৌনে ১২টায় দিনাজপুর সদরের ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের শ্রী চৈতু চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে নিজেকে কোতয়ালী থানার ওসি পরিচয় দিয়ে চৈতু বর্মণকে অভিযোগ রয়েছে বলে থানায় যেতে বলেন। এসময় পরিবার ও স্থানীয়দের কারও সঙ্গে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তাকে জোরপূর্বক সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তোলেন। মাইক্রোবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার ছেলের ঠিকানা নেয়। পরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাকে টাঙ্গাইলে অপহরণ করে নিয়ে যান।
টাঙ্গাইল থেকে ছেলে ইমনসহ তার বাবাকে ৮ জানুয়ারি রাত ১০টায় পুনরায় দিনাজপুর নিয়ে এসে ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের মাধবপুর গোয়ালপাড়া এলাকায় মহেশ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। নিরুপায় হয়ে নিজের ও ছেলের জীবন বাঁচাতে এক লাখ টাকা চাঁদা দিতে স্বীকার করে এক দিনের সময় চাইলে রাতেই তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পর দিন বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার লোকজন চৈতু ও তার ছেলেকে ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড়ে ডেকে নেয়। এসময় ওই চাঁদার টাকা দাবি করে এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয়ভীতি দেখায়। পরে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা এগিয়ে আসে। একপর্যায়ে আব্দুর রাজ্জাকসহ অন্যরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদেরকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ও আপেলকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এদিকে ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাককে সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সংসদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টি জানানো হয়।
এফএইচ