সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, গাজীপুরের অনেকগুলো মিল কারখানার মালিকেরা আমাদের বলেছেন তারা ব্যবসা-বাণিজ্য চালাতে পারছে না। এখন তো খুনী আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টরা মাঠে নেই। তাদের ৩০০ এমপি-মন্ত্রী খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে এখন আপনাদের কিসের ভয়। দয়া করে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনারসহ সকলের কাছে আমি অনুরোধ করব, যে দলেরই হোক চাঁদাবাজ-মস্তান, যারা অর্থনীতির চাকাকে থামিয়ে দিতে চায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন। তাদেরকে যদি আপনারা ধরতে না পারেন তাহলে জনগণ বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে আপনারাও ফ্যাসিবাদের দোষরদের খাতির করছেন।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর মুক্তিযোদ্ধা কলেজ মাঠে গাজীপুর জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এখন দেশ গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে নতুন চক্রান্তও শুরু হয়েছে। বিপ্লবের পরে প্রতি বিপ্লব, জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার কান্ড, এই দাবি, ওই দাবি-অবরোধ, ধর্মঘট, সচিবালয়ে আগুন, হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা। তারা বোঝাতে চায় আওয়ামী লীগ না আসলে হিন্দু ভাইয়েরা শান্তিত থাকতে পারবে না। কিন্তু অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ভারতের চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন দেশ গড়তে চাই, একটি অবাধ-নিরপেক্ষ পার্টিসিপেটরি, একটি ফেয়ার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেখানে অন্তরায় হলো, আমাদের যে ঐক্যর চেতনা ছিল ছাত্র জনতার। এখন নতুন করে এই এই অগ্রযাত্রা কি আবার বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করছে। কেউ বলে সংস্কার দরকার নাই, পরে করলেই হবে। আবার কেউ বলে সংস্কার করেন। কেউ বলে নির্বাচন তাড়াতাড়ি করেন, আবার কেউ বলে সংস্কার আগে হোক। যারা বিপ্লব করলাম, রক্ত দিলাম তাদের মাঝেই মতপার্থক্যে শুরু হয়েছে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন সেই সংস্কারটুকু করে আমরা নির্বাচনে যাই। সংস্কার না করে যারা নির্বাচন চায়, তারা সংবিধানের দোহাই দেন। এসব কিছু সামনে এনে একটা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। আমি তাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই, ড. ইউনুস আসছিলো কোন আইনে? কোন সংবিধানে? কোন বিধিতে ছিল? উপদেষ্টা পরিষদ হল, হাসিনা চলে গেল, শপথ করলেন কোন আইনে?
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, সংবিধান এবং আইন কি? সংবিধান হচ্ছে জনআকাঙ্খা। কোটি কোটি মানুষ যা চাইবে ঐটার লিখিত রূপ হচ্ছে সংবিধান। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা যখন কেয়ারটেকার করেছিলাম তখন সংবিধানে কেয়ারটেকার ছিল না। জনগণের দাবিতে কেয়ারটেকার হয়েছে। নির্বাচন হয়েছে, তারপর আইন। সংবিধান আইনের কথা বলতে গেলে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বেআইনি। উপদেষ্টাও বেআইনি।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আধিপত্যবাদী ভারত শাসন করছে এখন বিজেপির হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক সরকার। আমরা বলতে চাই আন্তর্জাতিক কনভেনশন, জেনেভা কনভেনশন সমস্ত ক’টনৈতিক বন্ধ করে এত বড় খুনি, হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ডকে কেন সেখানে আশ্রয় দিয়েছেন। তাহলে আমরা বলতে বাধ্য ১৮ বছরের হত্যা, নির্যাতন লুটপাট ও নিষ্ঠুরতার পেছনে আপনাদের হাত ছিল।
গাজীপুর জেলা জামায়েত ইসলামীর আমীর ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মো. সামিউল হক ফরুকী, এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানী।
এফএইচ/