সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গোপালগঞ্জে থানা থেকে রহস্যজনকভাবে হত্যা মামলার এক আসামি পালানোর ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার সকালে জেলার মুকসুদপুর থানায় এমন ঘটনা ঘটেছে। টাকার বিনিময়ে আসামি পালানোর নাটক সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ মামলার বাদী ও তার পরিবারের।
ঘটনা ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে গোপন রাখা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার দামদরদী গ্রামের বাড়ি থেকে ভ্যান চালানোর উদ্দেশে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় ১৬ বছর বয়সের ভ্যানচালক আকাশ। পরে ৭ মার্চ মুকসুদপুরের একটি ডোবা থেকে আকাশের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পালিয়ে যাওয়া আসামি হৃদয় শেখসহ ৫ জনকে আসামি করে ৮ মার্চ মুকসুদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আকাশের বাবা শাহা আলম মাতুব্বর। গত মঙ্গলবার দুপুরে বাদীর সহযোগিতায় বাড়ি থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আলাদা কক্ষ থাকলেও বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ছুটিতে থাকা ওসি তদন্তের রুমে নেওয়া হয় হৃদয়কে। পুলিশের দাবি জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হাতকড়া খুলে কৌশলে পালিয়ে যায় আসামি হৃদয়। বিষয়টি প্রথমে গোপন রাখলেও ওইদিন রাতে ঘটনাটি একটি প্রেস বিপ্তপ্তির মাধ্যমে জানায় থানার অফিসার ইনচার্জ। থানার মধ্য থেকে হত্যা মামলার আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হলে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের।
হত্যার শিকার হওয়া আকাশের পরিবারের দাবি, টাকার বিনিময়ে আসামি হৃদয়কে পালাতে সহায়তা করেছে পুলিশ। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হয়নি থানার অফিসার ইনচার্জ।
নিহতের পিতা শাহ আলম বলেন, ৭ তারিখে বিকেল ৩টার সময় পুলিশে ফোন দিয়ে মামলার আসামির অবস্থান জানাই। পরে পুলিশ গিয়ে আসামি হৃদয়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন সকালে থানা থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফোন করে জানায় আসামি থানা থেকে পালিয়েছে এবং এ বিষয়ে কাউকে না জানাতে। ছেলে হত্যার এক বছর পার হলেও আমি বিচার পাচ্ছি না। আসামি ধরে দিয়েছি কিন্তু তাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় ওসি টাকা খেয়েছে। যদি টাকা না খায় তাহলে থানা থেকে কিভাবে আসামি পালায়।
নিহতের মা শাবানা বেগম বলেন, আমার ছেলের গলায় গামছা পেচিয়ে মারছে। থানায় আমাদের কোনো দাম নাই। কারণ আমরা গরিব। এজন্য যারা বড়লোক তাদের দাম আছে। তারা টাকা দিয়ে এক রাতে ছাড়াই নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনা ও ছেলে হত্যার বিচার চাই।
মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, থানায় যে ঘটনা ঘটেছে এটা একটা দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। এটা সাধারণ কোনো ব্যাপার না, এটা অস্বাভাবিক একটা ঘটনা। এই অস্বাভাবিক ঘটনার কারণে সে সময়ে যে পুলিশ সদস্য ছিল তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ১ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া আসামিকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।
আরএ