সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কামরুলদের বাড়ি ফরিদপুর শহরতলির রঘুনন্দনপুর হাউজিং এস্টেটে। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঢাকার মিরপুর-১১ নম্বরে থাকতেন। কামরুল ইসলাম সেতু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বরে গুলিতে মারা যান।
বাবার এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মেয়ে উমাইয়া। যত রাতই হোক, বাবা না আসা পর্যন্ত খেতেন না মো. কামরুল ইসলাম ওরফে সেতুর (৪৭) মেয়ে উমাইয়া ইসলাম (১৯)।
গুলিতে নিহতের পর ৪ আগস্ট রাতেই কামরুলের লাশ ফরিদপুরে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। পরদিন বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর শহরের আলীপুর পৌর কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। বর্তমানে কামরুলের পরিবারের সবাই ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতেই আছেন।
পরিবার সূত্র জানায়, কামরুল ইসলাম সেতু ঢাকায় কসমেটিকসের ব্যবসা করতেন। তার অফিস ছিল মিরপুর-১০ নম্বরে। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
কামরুলের স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, ৪ আগস্ট দুপুরে নামাজ পড়তে যান তার স্বামী। নামাজ শেষে তিনি স্ত্রীকে কল করে বলেন যে তার এখানে খুব গণ্ডগোল হচ্ছে। অফিসে দুজন কর্মচারী আছে। তাদের বিদায় দিয়ে অফিস বন্ধ করে তিনি বাসায় ফিরবেন। চিন্তা না করতে বলেন।
কামরুল ইসলামের ছেলে আলভী বিন ইসলাম (২৩) বলেন, অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও তার বাবা বাসায় ফেরেননি। তখন তিনি বারবার বাবার নম্বরে কল দিতে থাকেন। অনেকক্ষণ পর একজন কলটি ধরে বলেন, ফোনটি যার, তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে মিরপুরের আল-হেলাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তিনি ও তার স্বজনেরা জানতে পারেন, ওই হাসপাতাল থেকে কামরুলকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই হাসপাতালে তাকে পাওয়া যায়নি। ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে গিয়ে বাবাকে খুঁজে পান তিনি। হাসপাতালের মৃত্যুর সনদে বলা হয়, মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
কামরুলের ছেলে আলভী বিন ইসলাম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করছেন। মেয়ে উমাইয়া এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন। কামরুল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে দিশাহারা পরিবারের সদস্যরা।
কামরুল ইসলামের মেয়ে উমাইয়া ইসলাম বলেন, বাবা যত রাত করে বাসায় ফিরুক না কেন, আমি না খেয়ে বসে থাকতাম বাবার জন্য। বাবা এলে আমরা একসঙ্গে খেতাম। বাবা নেই জানি। তারপরও বাবার অপেক্ষায় থাকি। যদি কখনও বাবা এসে খাওয়ার জন্য ডাকেন।
আরএ