সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় গভীর রাতে লালন আনন্দধামে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন আনন্দধামের প্রতিষ্ঠাতা কবি ও কথা শিল্পী অধ্যাপক মো. জাহিদ হাসান।
মঙ্গলবার(১ অক্টোবর) দুপুরে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকসেদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার দিবাগত গভীর রাতে একদল দুর্বৃত্ত লালন আনন্দধাম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য, লালন সাঁইর ছবি, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে ভস্মীভূত হয় বেশকিছু মূল্যবান গ্রন্থ, জার্নাল, হারমনিয়াম, একতারা, দোতারা, বায়া, জুড়ি, গিটারসহ আরও কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র।
এ ব্যাপারে আনন্দধামের প্রতিষ্ঠাতা কবি ও কথা শিল্পী এবং সদরপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহিদ হাসান বলেন, সোমবার সকালে লালন আনন্দধামে গিয়ে দেখি আমাদের আনন্দ ধামে অগ্নিকাণ্ড ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত গভীর রাতের দিকে একদল দুর্বৃত্ত আনন্দধামের দেওয়াল টপকে ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগ করে। এরপর বিষয়টি আমি প্রশাসনকে অবগত করা হয় এবং আমি বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিজের জায়গার ওপর ২০১৩ সালে লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করি। এরপর থেকেই ভাঙ্গা উপজেলার একমাত্র সাংস্কৃতিক চর্চার তীর্থস্থান হয়ে ওঠে এই লালন আনন্দধাম। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয় প্রতিষ্ঠাটি। যেমন, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম, দারিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা বৃত্তি, শীতবস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকদের স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে লালন আনন্দধাম। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দারূস সুন্নাহ কাউলিবেড়া গ্রুপে এইচএম ইমরান হোসেন নামের একটি আইডি থেকে লালন আনন্দধাম নিয়ে উসকানিমূলক পোস্ট করেন। পোস্টের এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আনন্দধামে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল। এ ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তদন্ত করে দোষীদের আইনে আওতায় আনার জোর দাবি করছি।
এ ব্যাপারে লালন আনন্দধামের সভাপতি দীনেশচন্দ্র রায় বলেন, রোববার দিবাগত গভীর রাতে যখন বিদ্যুৎ ছিল না, তখন একদল দুর্বৃত্ত আনন্দধামের দেয়াল টপকে ভিতরে ঢুকে লালন সাঁই ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর করে। মূল্যবান গ্রন্থ, জার্নাল ও বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ভেঙে ফেলা হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকসেদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই বিষয়ে রাতে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এফএইচ