সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
ফেনীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে এক সাংবাদিকসহ ১২ জন আহত হয়েছে। এসময় ৪টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার ছনুয়া রাস্তার মাথায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ফেনী সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম ও ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আহসান সুমন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় ঘরোয়া বৈঠক করেন ফেনী সদর উপজেলা ছাত্রদল সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম। বৈঠক শেষে যাওয়ার পথে হামলা করেন ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আহসান সুমন ও ফেনী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিনের লোকজন। এসময় হামলায় ৩ জন আহত হয়।
সেই ঘটনার জের ধরে নজরুল ইসলামের অনুসারী ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শরীফুল ইসলাম ও মোশাররফ হোসেনকে রোববার সকালে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় সুমনের লোকজন। এরপর তাকে উদ্ধারের জন্য সদর ছাত্রদল সদস্য সচিব নেতাকর্মীদের নিয়ে ছনিয়া রাস্তার মাথায় অবস্থান নিলে সেখানে দুপক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ ১২ জন আহত হয়।
আহতরা হলেন, ফেনী সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম (৩০), ছাত্রদল কর্মী মেহেদী হাসান (২৪), ইউনিয়ন তাঁতিদল নেতা আবদুল মোতালেব, ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সৈকত (২৫), কালিদহ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল আলম সৌরভ (২৪), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাঈন উদ্দিন (৪০), সিরাজ (৫০), ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শরীফুল ইসলাম (২৯), স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন শীমুল(৩০), ছাত্রদল কর্মী রিফাউল আলম মজুমদার (১৯), ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী হেল্পসেলের সমন্বয়ক আহসান সুমন (২৯) তার ভাতিজা সামি (২০), সংবাদকর্মী এম কাওছার (২১) ও জাহিদুল আলম রাজন (২৬)।
আহতদের মধ্যে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ার সংবাদ কর্মী কাওছার, ছাত্রদল নেতা নজরুল ইসলাম, ছাত্রদল কর্মী মেহেদী হাসান, তাঁতিদল নেতা আবুল মোতালেব, ছাত্রদল নেতা সৈকত, সৌরভ ও সিরাজ নামের এক ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ছনুয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আক্তার হোসেন শিমুল বলেন, আহসান সুমন দলীয় কোনো পদধারী নেতা নয়। উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নজরুল ইসলামের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সে আমাদের ওপর হামলা করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে আহসান সুমনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ফেনী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন বলেন, শনিবার বিকেলে ছাত্রদল নেতা নজরুলের ঘরোয়া বৈঠকে হামলা করে আহসান সুমন। আজ সকালে ২ জন কর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করতে গেলে নজরুল বাধা দিলে তার ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ থেকে ১২ জন আহত হন। নজরুলসহ ৭ জনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. রেদোয়ান বলেন, গুরুতর আহত ৭ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ২ জন ও কোম্পানিগঞ্জ থেকে ১ জনসহ মোট ৩ জনকে আটক করেছে। অভিযোগ পেলে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সংঘর্ষের কারণ বের করা হবে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে ফেনী শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে জেলা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।
অ