সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
এবার ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলা, হত্যার উদ্দেশে মারপিট, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে দুইজন সাংবাদিক ও ৩৫ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যার চেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানান বাদীর আইনজীবী জান্নাতুল ফিরদাউস লিলন।
মামলাটি করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের সিঙ্গিয়া দৌলতপুর গ্রামের মো. তাজেলের ছেলে শিক্ষার্থী মামুন ইসলাম (১৯)।
ঠাকুরগাঁওয়ের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নিত্যানন্দ সরকার মামলাটি আমলে নিয়েছেন এবং বিচারক মামলাটি তদন্ত করে তার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার জন্য ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
মামলায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. অরুনাংশু দত্ত টিটো, পৌর যুবলীগের সভাপতি আমির হোসেন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর দত্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য রয়েল বড়ুয়া, পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাইয়ুম চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। এছাড়াও যমুনা টেলিভিশনের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি পার্থ সারথি দাস এবং দেশ টেলিভিশন, আমাদের সময় ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পত্রিকার ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি শাকিল আহমেদকে ঐ মামলায় আসামি করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় সাংবাদিক পার্থ সারথী দাসকে ৩০ নম্বর আসামি এবং শাকিল আহমেদকে ৩৪ নম্বর আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসামিরা লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ককটেল, হাতবোমা নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের ওপর হামরা চালান। ছাত্রদের প্রতিহত করতে ককটেল ও হাতবোমা ছোড়েন। বেলা আড়াইটার দিকে মামুন ইসলাম শহরের আর্টগ্যালারি মোড়ে পৌঁছালে আসামিরা তাকে ঘিরে ফেলে ককটেল ও হাতবোমা ফাটান। পরে আসামিরা রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও পিস্তল দিয়ে মামুনকে ভয়ভীতি দেখান। আসামি মো. সিদ্দিক তার প্যান্টের পকেট থেকে ৭ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেন। তাজউদ্দিন নামে আরেক আসামি রামদা দিয়ে মামুনের মাথায় কোপ দেন। আসামি ফরহাদ চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মামুনের পায়ে আঘাত করেন। ইকবাল লোহার রড দিয়ে বুকের পাঁজরে আঘাত করলে পাজরের হাড় ভেঙে যায়। পরে মামুনকে আসামিরা সমীর দত্তের চেম্বারে নিয়ে গিয়ে মামুনের বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মামুনের বাবা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে এলে আসামিরা তার কাছ থেকে মামলা না করার শর্তে ফাঁকা নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সই নেন। পরে তারা মামুনকে ছেড়ে দেন।
মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিক পার্থ সারথি দাস বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করেছি। অথচ আজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলা ও আন্দোলনের এক ছাত্রকে মারধর করার পর অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো মামলায় নিজের নাম দেখে অবাক হলাম।
সাংবাদিক শাকিল আহমেদ বলেন, দুপুরে খবর পেলাম মামুন ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী আমার নামে আদালতে মামলা করেছে। মামলার এই বাদীকে আমি চিনিই না, সেও হয়তো আমাকে চিনে না। মামলার তার ফোন নম্বরও নেই যে তার সঙ্গে যোগাযোগ করব! আমি মনে করি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে এই মামলা করা হয়েছে।
রাজনৈতিক এই মামলায় দুই সাংবাদিকদের নাম দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সাংবাদিক মহল।
আরএ