সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গাজীপুরের কালিগঞ্জে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এস এম ইমদাদুল হক আকলুকে (৬৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ৪ জন আহত হয়। নিহত আকলু মুক্তারপুরের রামচন্দ্রর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি মুক্তারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কালিগঞ্জ উপজেলার মুক্তারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের স্থানীয় নাশু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা মারুফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবলু মিয়া দাবি করেন তাকে আওয়ামী লীগের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে। স্থানীয়রা বলছে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরই সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম তোরণের অফিস ও বাড়ীতে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো, রাথুরা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩৫), ফাইজ উদ্দিন শেখের ছেলে মঞ্জু শেখ (৬৫), রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইসমাইল শিকদারের ছেলে সীমান্ত শিকদার ঈমন (২৪) এবং বজলুর সরকারের ছেলে মেহিদী হাসান সরকার (৩১)। তাদের মধ্যে মেহেদী ও ঈমন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসাপাতাল থেকে চলে গেলে এবং জহিরুল ও মঞ্জু শেখকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তোরণের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামানের (ট্রাক) প্রতীকের পক্ষে মৌন সমর্থন দেন এমদাদুল হক আকলু গ্রুপের লোকজন। একই ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক প্রতিপক্ষ নূর মোহাম্মদ গ্রুপ সরাসরি সমর্থন দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির (নৌকা) পতীকের পক্ষে। নির্বাচনের পর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে মৌন দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সম্প্রতি দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
তারা আরও জানায়, বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আকলু গ্রুপের লোকজন নূর মোহাম্মদ গ্রুপকে আওয়ামী লীগের দালাল বলে এলাকায় প্রচার চালায়। সকাল ১০টার দিকে আকলুর নেতৃত্বে ১০/১২ টি মোটরসাইকেলে নেতা-কর্মীরা এলাকায় মিছিল করে স্থানীয় নাশু মার্কেট এলাকায় অবস্থান নেয়। এসময় নূর মোহাম্মদ গ্রুপের ৩০/৪০ জন লোক তাদের ধাওয়া করে এবং আকলুকে আটকে পিটিয়ে আহত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মুক্তারপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক বাগমার নয়ন জানান, ইমদাদুল হক নাশু মার্কেট এলাকায় অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে তার ওপর হামলা করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাবলু মিয়া বলেন, গেল আন্দোলনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন আকলুকে ধরে পুলিশে দিয়েছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম তোরণ এবং সবুর মেম্বারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ১০/১৫ জন লোক তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
গাজীপুর জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান জানান, এমদাদুল হক আকলু দলীয় কোন্দলে নিহত হয়েছে কি না কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিন।
কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কর্মকর্তা মারুফ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন সংঘর্ষে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ মিক্স রয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আমরা পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এফএইচ