সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
যৌতুকের জন্য স্বামীর দেওয়া কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ফজিলাতুন নেছা (২৪) নামে এক গৃহবধূ। আগুনে ওই গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন জায়গা পুড়ে গেছে। বতর্মানে ওই গৃহবধূ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ ফজিলাতুন নেছা সদর উপজেলার কোমইগাড়ী সাকিদার পাড়ার ফজলুর হোসেনের মেয়ে।
এ ঘটনার পর বুধবার ফজিলাতুন নেছা বাবা ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে স্বামী গোলাম রাব্বানীসহ তার পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। এরপর পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবে চার বছর আগে সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছার। বিয়ের কিছুদন পরই পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে গোলাম রাব্বানী। বিষয়টি তার স্ত্রী জানতে পেরে নিষেধ করলে পরকীয়া করবেন না বলে যৌতুক বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর থেকেই স্ত্রী ফজিলাতুন নেছাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার সকালে আবারও তাকে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য বলা হয়। এসময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাঠি দিয়ে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন স্বামী গোলাম রাব্বানী। একপর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার পরিবারের সদস্যদের জোকসাজশে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তার চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয়রা এসে ফজিলাতুন নেছাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে গিলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওযায় সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
ফজিলাতুন নেছার বাবা ফজলুর হোসেন বলেন, যৌতুকের জন্য মেয়েকে চাপ দিত এবং প্রায় মারপিট করতো। এর আগে কয়েকবার তাদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা সমস্যা সমাধান না করে শেষ পযর্ন্ত আমার মেয়ের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা পুড়ে গেছে। মেয়েটার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমার মেয়ের শ্বশুড় বাড়ির সদস্যসহ অন্যান্যরা জড়িত আছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি। যাতে আর কোনো মেয়েকে যৌতুকের জন্য এমন নির্যাতনের শিকার হতে না হয়।
নওগাঁ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আ. ওয়াদুদ বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজনের নামে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত স্বামী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত আছে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরএ