সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চিংড়াখালী ইউনিয়নের ইউপি সদস্যের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও মারপিটে গুরুতর আহত ইউপি সদস্যের ভাই মো. বাবুল বক্স (৪৭) নিহত হয়েছেন। হামলার পর ১৫ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় চিংড়াখালী এলাকায় নিজ বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত বাবুল বক্স চিংড়াখালী ইউনিয়নের মুনসুর বক্সের ছেলে ও ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. বাদল বক্সের ভাই। তার স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।
নিহতের ছোট ভাই চিংড়াখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. বাদল বক্স বলেন, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ওই দিন দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে চরগোপালপুর আমার স্ত্রী সংরক্ষিত সদস্য জাহানারা বেগমের বাড়িতে স্বপন শিকদার, দুলাল ও আলালের নেতৃত্বে ৩৫-৪০ জনের একটি দূর্বৃত্ত দল পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
পরে হামলাকারীরা ঘরে থাকা স্বর্ণলঙ্কার, নগদ টাকা, ৮৫ বস্তা সুপারীসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। মুঠোফোনে খবর পেয়ে আমার বড় ভাই বাবুল বক্স আমাদের বাড়ির দিকে আসতে শুরু করেন। হামলাকারীরা লুট করে ফেরার সময় পথেই বড় ভাই বাবুল বক্সকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পিরোজপুর হাসপাতালে নেয়। এরপর তার অবস্থা আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিউতে লাইফ সাপর্টে থাকা অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে মারা যায়।
সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম বলেন, গভীর রাতে দুলাল বক্স এসে দরজা খুলতে বলে। দরজা না খুললে তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে লুটপাট চালায়। আমার ফোন পেয়ে ভাসুর বাবুল বক্স আমাদের বাড়ির দিকে আসতেছিলেন। পথিমধ্যে হামলাকারীরা তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আমাকে বাচাঁতে গিয়ে তিনি মারা গেলেন। হত্যাকারীদের বিচার চাই।
জাহানারা বেগম আরও বলেন, দুলালদের সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। তারা মূলত আমাদের বাড়ি লুট করতে এসেছিল। আগেও এলাকার অনেক মানুষের বাগি লুট করেছে। মারধর, হত্যা, লুট ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজ্য সৃষ্টি করাই তাদের কাজ।
আসাদ বক্স নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, দুলাল ও তার লোকজন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সরকার পরিবর্তনের পরে অনেককে মারধর করেছে। বাবুল বক্সকে তো মেরেই ফেলল। বাবুল ভালো লোক ছিল, সে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা হামলকারীদের বিচার চাই।
অভিযুক্ত দুলালও একই এলাকার বাসিন্দা। সে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়তি থাকলেও তার পদবী নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি স্থানীয়রা। হামলার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন দুলাল ও তার লোকজন।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, বাবুল বক্স নামের এক কৃষকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরএ