সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
দেয়াল লিখন ও গ্রাফিতির মাধ্যমে রং-তুলির আঁচড়ে বদলে গেছে কুমিল্লার সব দেয়াল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লাতেও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীরা হাতে নিয়েছেন রং-তুলি।
যেসব দেয়ালে এতদিন ছিল রাজনৈতিক ব্যানার-পোস্টার-বিভিন্ন বিজ্ঞাপন কিংবা শ্যাওলা জমেছিল। সেসব দেয়ালে এখন শোভা পাচ্ছে ইতিহাস ও সাহসিকতার বিপ্লবের নানা স্লোগান।
কারো রং তুলিতে উঠে এসেছে আন্দোলনের সময় আবু সাইদের শহীদ হওয়ার চিত্র। কারো রং তুলিতে উঠে এসেছে শহীদ মুগ্ধের সেই উক্তি পানি লাগবে পানি। কেউবা অঙ্কন করেছেন বিপ্লবের গল্প। আবার কারো রং তুলতে উঠে এসেছে সকল ধর্মের মানুষের সোনার বাংলাদেশ।
তাদের চিত্রকর্ম ও লেখায় ফুটে উঠেছে ‘হোক প্রতিবাদ’, ‘সংস্কার করবে কে?’, ‘আমরা হার মানবো না’, ‘২৪-এর তারুণ্য’, ‘আমরাই বিকল্প’, ‘ভেঙে ফেল কর রে লোপাট’, ‘খেটে বড় হও, চেটে নয়’, ‘স্বাধীনতা এনেছি সংস্কারও আনবো’, ‘দেশকে ভালোবাসলে আগলে রেখো’, ‘দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার হে’, ‘ভয়ের দেওয়াল ভাঙলো, এবার জোয়ার এলো ছাত্র-জনতার’, ‘রক্তাক্ত জুলাই ২০২৪’, ‘দেশটা আমাদের সবার’ ইত্যাদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির নানা উদাহরণসহ কুমিল্লার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার চিত্র।
দেয়াল লিখন, গ্রাফিতি, চিত্র অঙ্কনসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা। কেউ ফুটিয়ে তুলছেন উদ্যমী প্রতিবাদ। কেউবা আবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ, মুগ্ধ এবং কুমিল্লার শ্রাবণের বীরত্বগাঁথার ছবি আঁকছেন।
কুমিল্লা নগরীর ডিসি রোড, রাণীরদিঘীর পাড়, নানুয়া দিঘীর পাড় সড়ক, ফৌজদারি সড়ক ও জিলাস্কুল ও নবাব ফয়জুন্নেচ্ছা বিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা রং তুলিতে অঙ্কন করেন।
‘Cumilla 3500 Gen Z’ গ্রুপের ওনার ও আর্টিস্ট খাতেমুন জান্নাত ইভা বলেন, আমাদের এ প্রজন্মকে অনেকে বলে মোবাইলে আসক্তির প্রজন্ম। অথচ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সফল করেছে বর্তমান প্রজন্ম। অনলাইন যোদ্ধা হয়েও অনেকে কাজ করেছেন। সে অবদানগুলো দেয়ালে তুলে ধরা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তরুণরা চাইলে কি না করতে পারে তার বড় উদাহরণ বাংলাদেশ। গ্রাফিতির মাধ্যমে তরুণরা যে মেসেজ দিচ্ছে কুমিল্লাবাসীকে, সেটি অব্যাহত থাকলে আগামীতে কারও চাটুকারিতা থাকবে না।
জান্নাত ইভা বলেন, আমরা ‘৫২ দেখিনি, ৭১ দেখিনি; তবে দেওয়ালচিত্রের মাধ্যমে আমরা সেসব বীরত্বের সম্পর্কে জানতে পেরেছি। গত দুই মাসে ছাত্র আন্দোলন থেকে স্বৈরাচার পতন, এ সময়টা তরুণ প্রজন্ম পার করেছে। সে বিষয়গুলো দেওয়ালচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি নোংরা শ্যাওলাযুক্ত দেয়ালগুলোর সংস্কার কাজও হয়ে গেল।’
আরএ