সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নোয়াখালীর দুটি থানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার ঘটেছে। এসময় পুলিশের গুলিতে তিনজন ও জনতার হাতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুলিবদ্ধি হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ। যে দুটি থানায় হামলা করার হয়েছে, সেগুলো হলো- সোনইমুড়ি থানা ও চাটখিল থানা। নিহতের ঘটনা ঘটে সোনাইমুড়িতে। সোমবার বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর শুনার পর হাজার হাজার বিক্ষোভকারী উল্লাস করতে সোনাইমুড়ী উপজেলা সদরের রাস্তায় নেমে আসেন। এসময় তারা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে রাজপথ। সোনাইমুড়ী বাজার, সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকা দখলে নিয়ে আনন্দ মিছিল করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। বিকেলে আনন্দ মিছিলের একটি দল হঠাৎ করে সোনাইমুড়ী থানার দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় থানার ভেতর থাকা পুলিশ সদস্যরা গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই একজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। পুলিশের গুলিতে একজন মারা গেছে এমন খবর শুনার পর হাজার হাজার উত্তেজিত জনতা সংঘবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করলে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
চাটখিলের স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে চাটখিলে বিকেলে আনন্দ মিছিল বের হয়। একপর্যায়ে চাটখিল থানায় হামলা চালায় বিক্ষুব্দ লোকজন। পরে তারা থানার ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলার সময় থানার পুলিশ সদস্যরা যে যার মতো পালিয়ে গেলেও তিনজন পুলিশ থানার ছাদে আশ্রয় নেয়। এসময় বিক্ষুব্দরা তাদের আক্রমণ করতে গেলে বিক্ষোভকারী একটি অংশ তাদের রক্ষা করেন।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক মো. শাকিল জানান, সোনাইমুড়ী থেকে তিনজনের লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। তারা সবাই গুলিবিদ্ধ। আরও বেশ কিছু গুলিতে আহত মানুষ চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেখার বলেন, সোনাইমুড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের একজন সদস্যও রয়েছেন। দশজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বাকিরা সোনাইমুড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল থানায় বিক্ষোভকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সোনাইমুড়ীতে পুলিশের এসআই মোহাম্মদ বাছির ও একজন কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। থানার অপর সদস্যদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তবে চাটখিলে পুলিশের কোনো সদস্য হতাহত হননি।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সোনাইমুড়ী থানায় আটকে পড়া পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী কাজ করছে। চাটখিলের পরিস্থিতি সেনাবাহিনী যাওয়ায় শান্ত হয়েছে। জেলা পরিবেশ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করা হচ্ছে।
আরএ