সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গত চব্বিশ ঘন্টার রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবে গেছে নোয়াখালী জেলা শহর। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর থেকে টানা বৃষ্টিতে পুরো নোয়াখালী পৌর শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা শহরের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূণ সরকারি-বেসরকারি অফিস, সড়ক, বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের লক্ষাধিকের বেশি মানুষ।
শহরের বাসিন্দরা বলছেন, নোয়াখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এমন পরিস্থিতি হয়। তারপর নেওয়া হয়না সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা। শুধু আশ্বাস দিয়েই কর্তৃপক্ষ বছর পার করছেন। অন্যদিকে, নোয়াখালী পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন, শহরের ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করায় এবং খাল-নালা দখল করার কারণে এমন অবস্থ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বর্ষণে নোয়খালী পৌরসভাসহ পুরো জেলা শহরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক জলাবদ্ধতা। পানিতে বিভিন্ন সরকারি অফিসের ঢুকার পথ ডুবে গেছে। এর মধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল,জেলা শিক্ষা ভবন, জেলা রেজিস্টার কার্যালয়, জেলা রেকর্ড রুম, জেলা হাকিম কোয়ার্টার, জেলা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের মাঠ, নোয়াখালী সরকারী মহিলা কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস রয়েছে। পানিতে ডুৃবে গেছে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা সিভিল সার্জনের বাসভবনের সড়কও। জীবিকার তাগিদে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষ পড়েছেন বিপাকে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেননা।
মো. হারুন নামে একজন বলেন, কোনো সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা নেই। প্রতি বর্ষা মৌসুমেই জলাবদ্বতা হয়। তারপরও কর্র্তৃপক্ষের টনক নড়ে না।
অনিসুর রহমান নামে একজন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে অতিভারি বৃষ্টিতে রীতিমতো ভেসে গেছে মাইজদী শহর। অধিকাংশ সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে পানি উঠেছে। বাড়ির আঙিনা ডুবে আছে হাঁটু পানিতে, অনেকের ঘরেও পানি ঢুকেছে। এ বৃষ্টিতে মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। সড়কের আশপাশের বাসাবাড়ির আঙিনায় এখনো বৃষ্টির পানি জমে আছে।
ইকবাল হোসেন নামে আরেকজন জানান, সরকারী-বেসরকারী অফিস, হাসপাতাল, বিপণি বিতান থেকে শহরের অলিগলি সব জায়গায় জলাবদ্ধতা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অফিসমুখী মানুষের ভিড় ছিল না। কিন্তু স্থানীয়দের দুর্ভোগ চরমে। ঘর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়া যাচ্ছে না।
আকবর হোসেন নামে একজন বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজে যাওয়ার সময় মুসুল্লিরা হাঁটু পানি মাড়িয়ে মসজিদে গেছে। মহিলা-শিশুরা বের গতে পারছেননা। রোগীদের চরম ভোগান্তী।
নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল জলাবদ্ধতার কারণে নাগরিকদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি নিজে আজ সকাল থেকে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়েছি। দেখলাম ব্যাক্তি মালিকানাধীণ প্রায় পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবর করা হয়েছে। পৌরসভার ভেতরে যেসব খাল-নালা রয়েছে সেগুলো দখল করে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার (২ আগষ্ঠ) বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে করণীয় ঠিক করা হবে।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত চব্বিশ ঘন্টায় নোয়াখালী জেলা শহরে ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত ২০ বছরের মধ্যে নোয়াখালীতে চব্বিশ ঘন্টার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালীতে আরও কয়েক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
এফএইচ