দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
গত ২১ জুলাই (রোববার) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আট বছর বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে আবদুল্লাহ্পুর রেলগেট এলাকায় ঘুরতে বের হন আবু বক্কর ছিদ্দিক শিবলু। হঠাৎ শুরু হয় গোলযোগ। আচমকা গোলযোগে শিবলুর মাথার বাম পাশে গুলি লাগে। পরে তাকে উদ্ধার করে আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জুলাই রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত শিবলু দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁনপুর গ্রামের হাসেম মিয়ার নতুন বাড়ির মৃত আবুল হাসেমের ছেলে।তিনি ঢাকার উত্তরায় বেসরকারি কোম্পানি এলিট পেইন্ট কারখানার ব্যবস্থাপক ছিলেন। চাকরির সুবাদে প্রায় চার বছর ধরে উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। পরিবারে তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তর রিমা, ফারহান ছিদ্দিক (৮) এবং নুসাইবা ছিদ্দিক (১০ মাস) নামে দুই সন্তান রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাত ১০টার দিকে তার মরদেহ নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (২০ জুলাই) দুপুরে ঢাকার উত্তরা এলাকায় শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় এলিট পেইন্ট কারখানার ব্যবস্থাপক আবু বক্কর ছিদ্দিক ওরফে শিবলু। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকার আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাত ৩টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মরদেহ দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁনপুর গ্রামের পৈত্রিক বাড়িতে আনা হয়। রাত ১০টার দিকে বাড়ির দরজায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ সময় নিকট আত্মীয়স্বজন, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী সুনাইয়া আক্তার কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, স্বামী দুনিয়া থেকে চলে গেছেন। এখন আমি ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে কিভাবে জীবন যাপন করব।
নিহতের বড় ভাই আবদুল হাকিম বাবলু বলেন, ঘটনার দিন ছেলে ফারহানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন শিবলু। আবদুল্লাহপুর রেলগেট এলাকায় বসে ছিলেন তারা দুজন। গোলযোগ শুরু হলে তারা বাসা ফেরার জন্য উঠে দাঁড়ালে হঠাৎ শিবলুর মাথার বাম পাশে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আশপাশের লোকজন ভাইকে (শিবলু) অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠান। অবস্থার আরও অবনতি হলে মঙ্গলবার আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম বলেন, ঢাকায় কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। নিহতের মরদেহ নিজ গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
আরএ